ইউক্রেনের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন না ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনকভের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত একটি ফোনকলে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানতয। ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতি সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের হুঁশিয়ারির পর গানতয এ সিদ্ধান্ত নেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এ সিদ্ধান্ত ‘খুব হতাশাজনক’ অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তেল আবিবে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ইয়েভগেন করনিশুক।

রাশিয়ার হুঁশিয়ারির পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত ফোনকলে অংশ নেননি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানতয

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গানতয বলেছেন, যথেষ্ট ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কয়েকটি আভিযানিক কারণে আমাদের পক্ষে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে আমাদের প্রযুক্তির গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত আরও কিছু বিষয় জড়িয়ে আছে।

বেনি গানতযের অসম্মতির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে ফোনকলের জন্য পুনরায় সময় চেয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। লাপিদের অফিস সময় দিয়েছে এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ ফোনকল অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানকে সামনে রেখে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র চাইবেন বলে আভাস দিয়েছেন করনিশুক।

এদিকে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিপক্ষে মতপ্রকাশ করে এমএসএনবিসিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেনকে দেওয়া যে কোনো অস্ত্র রুশ বাহিনীর মাধ্যমে ইরানের হাতে পৌঁছাতে পারে। অতীতে বহুবার এমন হয়েছে। আমরা এক যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র পাঠিয়েছি আর হাত ঘুরে সেটা ইরানের কাছে পৌঁছেছে এবং তারা আমাদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করেছে।

তিনি বলেন, গোলান মালভূমিতে আমরা অভিযান চালিয়েছিলাম যাতে ইরান সেখানে আমাদের বিরুদ্ধে আরেকটি ফ্রন্ট খুলতে না পারে। দেখা গেল, ইসরায়েলি অস্ত্র দিয়েই আমাদের সৈন্যদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের অবস্থান যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবতাপ্রসূত বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু।

এর আগে গতকাল রাতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত একটি ফোনকলে অংশ নিতে আকষ্মিকভাবে অস্বীকৃতি জানান ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানতয। আগস্ট মাসে এ ফোনকলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে হতাশা ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ইয়েভগেন করনিশুক।

হিব্রু ভাষার দৈনিক মারিভের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে করনিশুক বলেছেন, কেন ফোনকল বাতিল করা হলো তার কোনো ব্যাখ্যা ইসরায়েল দেয়নি। আমার মনে হয় না আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভবিষ্যতে গানতযের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা ইসরায়েলকে বলেছি, আক্রমণের জন্য না হোক, অন্তত প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র দিন। কিন্তু আট মাস ধরে তাদের রাজি করাতে পারছি না।

তিনি বলেন, ইরান হচ্ছে ইসরায়েল ও ইউক্রেন উভয়ের শত্রু। এখন যেহেতু ইউক্রেনে ইরানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সামনে এসেছে, আশা করছি ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মনোভাব পাল্টাবে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়টিই তুলে ধরবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবো। কয়েকদিন সময় লাগবে। কিন্তু কাজটি আমরা করবো। আমরা ইসরায়েলকে অনুরোধ করবো যাতে আমাদের মিউচুয়াল শত্রু ইরানের দিকে তাকিয়ে হলেও অস্ত্র সরবরাহ করে।