ধূসর তালিকা থেকে পাকিস্তানের মুক্তি, কালোতে মিয়ানমার

ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকা থেকে মুক্তি পেয়েছে পাকিস্তান। গত ৪ বছর ধরে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া ও জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ যোগানের অভিযোগে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় রেখেছিল এফএটিএফ। তবে ধূসর তালিকা থেকে কালো তালিকায় পৌঁছে গেছে এশিয়ারই আরেক দেশ মিয়ানমার।

চার বছর পর এফএটিএফের তালিকা থেকে মুক্তি পেল পাকিস্তান

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর প্যারিসে সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নের অভিযোগে পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক ওয়াচডগ সংস্থা এফএটিএফের সভায় পাকিস্তানকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ সম্পর্কে জানায়, পাকিস্তান মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ এবং বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে তার কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০১৮ সালে যেসব ঘাটতি দেখা গিয়েছিল, সেগুলোও ভালোভাবে মোকাবিলা করা শুরু করেছে ইসলামাবাদ।

এফএটিএফ আরও জানায়, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে এফএটিএফের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর ফলাফলও সন্তোষজনক পাওয়া গেছে। এ কারণে এফএটিএফ মনে করছে, পাকিস্তানকে আর নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজন নেই।

২০১৮ সালে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করার পর দেশটিকে ৩৪টি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল এফএটিএফ। এসবের মধ্যে ২৭টি ছিল সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ এবং ৭টি মুদ্রাপাচার সম্পর্কিত।

এদিকে শুক্রবার এফএটিএফের এই বিবৃতির কিছু সময়ের মধ্যেই এক টুইটবার্তায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ধূসর তালিকা থেকে মুক্তির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেনাপ্রধানকে অভিনন্দন জানান।

তিনি এই প্রাপ্তিকে বছরের পর বছর ধরে বেসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফসল বলে উল্লেখ করে বলেন, আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কামার আহমেদ বাজওয়াকে বিশেষভাবে শুভেচ্ছা জানাই, পাশাপাশি দেশের সব রাজনৈতিক দলকেও এই ধূসর তালিকা থেকে মুক্তির জন্য ধন্যবাদ দেবো, আলহামদুলিল্লাহ।

এফএটিএফের ধূসর তালিকা থেকে মুক্তির মাধ্যমে বিশাল একটি সংকট কাটিয়ে উঠেছে পাকিস্তান। কারণ, এখন থেকে আর দেশটিকে বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এডিবি থেকে ঋণ পেতে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। আর আর্থিক মন্দা ও সাম্প্রতিক প্রলয়ংকারী বন্যার কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি বর্তমানে একেবারে ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছে গেছে, তাতে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর ঋণ না পেলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে দেশটি।

শুক্রবার প্যারিসে এফএটিএফের বৈঠক চলাকালে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। কিন্তু তাদের সেই আপত্তি কোনো কাজে আসেনি। পাকিস্তানের সাথে ধূসর তালিকা থেকে বের হয়ে এসেছে নিকারাগুয়াও। তবে প্রায় দুই বছর ধরে সেনাশাসনের অধীনে থাকা মিয়ানমারের এ তালিকায় অবনমন ঘটেছে। তারা ধূসর তালিকা থেকে কালো তালিকায় গিয়ে ঢুকেছে।