৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হারিয়েছে ইউক্রেন

ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশেঙ্কো বলেছেন, গত কয়েকদিনের রুশ হামলায় তার দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৪০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। মোট চার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান। এ পর্যন্ত হামলার ধরন দেখে বুঝা যাচ্ছে পশ্চিম ইউক্রেনে রেল পরিবহন ব্যবস্থা অচল করতে বেছে বেছে ৩৩০ কেভি সাবস্টেশন ও ট্রান্সফরমারগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে।

বেছে বেছে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, শনিবার সকাল থেকে রুশ বাহিনী বিভিন্ন স্থানে ৪০টি মিসাইল ও ১৬টি ড্রোন ছুঁড়েছে। এর মধ্যে ২০টি মিসাইল ও ১১টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। গত ৩০ ঘন্টায় কিয়েভ, লভিভ, রিভনি ও পোলতাভার এক ডজনের বেশি ট্রান্সফরমার, জেনারেটর ও সাবস্টেশনে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ কিরিলো তিমোশেঙ্কো বলেছেন, দেশের মোট ১৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। সবশেষ আজ সকালে কিরোভগ্রাদ অঞ্চলের ৩৩০/১৫৫/১৫ কেভি সাবস্টেশনে উপর্যুপরি কয়েকটি ড্রোন ছোঁড়া হয়েছে। রিভনি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশের ৩৩০ কেভি ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে এসব হামলা চালানো হচ্ছে বলে অনেক মনে করছেন।

কর্মকর্তারা বলেন, ৩৩০ কেভি ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক পুরোপুরি অচল হয়ে পড়লে রিভনি এনপিপি থেকে সরবরাহ হারিয়ে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চল তাপবিদ্যুতের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যমান তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সেখানকার আবাসিক ও জরুরি চাহিদা মেটাতে পারলেও ইলেকট্রনিক রেল নেটওয়ার্ক সচল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।

ইলেকট্রনিক রেল নিয়ে শঙ্কা মাথায় রেখে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে রেল নেটওয়ার্ককে ডিজেল লোকোমোটিভে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও দেশটিতে ডিজেল লোকোমোটিভের সংখ্যা বর্তমান চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। ডিজেল লোকোমোটিভ চালাতে হলে ইউক্রেনকে তেল আমদানিতে করতে হবে ইউরোপ থেকে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন হাতবদল হয়ে রাশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়া তেল অনেক চড়া দামে কিনতে বাধ্য হবে ইউক্রেন।

বিদ্যুৎ নিয়ে বেকায়দা অবস্থার কারণে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ রুশ বাহিনীর কাছ থেকে জাপরোঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফিরে পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। জাপরোঝঝিয়া এনপিপির নিয়ন্ত্রণ নিতে শুক্রবার প্রায় ৩০টি রাবার ও স্পিডবোটে চড়ে ইউক্রেনের আড়াই শতাধিক সৈন্য দনিপার নদী পাড়ি দিয়ে জাপরোঝঝিয়া উপকূলে পৌঁছে। রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে ওই আক্রমণ ব্যর্থ হয়।