অস্ত্র দেবে না ইসরায়েল, ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি

ইউক্রেনের যুদ্ধে কিয়েভকে অস্ত্র না দিয়ে নিরপেক্ষ থাকার ব্যাপারে ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, কিয়েভকে অস্ত্র দিয়ে সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেলআবিব, তা ইরানের সাথে রাশিয়ার সামরিক অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করেছে। খবর আলজাজিরা।

ভলোদিমির জেলেনস্কি

সোমবার, ২৪ অক্টোবর ইসরায়েলের গণমাধ্যম হারেৎজের আয়োজিত এক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় জেলেনস্কি ইসরায়েলের কাছে আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল প্রযুক্তির জন্য তার অনুরোধের পুনরাবৃত্তি করেছিলেন। সাম্প্রতিক রাশিয়ার বিমান ও ড্রোন হামলা ব্যর্থ করতে তিনি তেলআবিবের কাছ থেকে এ সহায়তা কামনা করেন।

সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ানদের প্রতিরোধ করছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের নিজস্ব আয়রন ডোম প্রযুক্তি নেই। আমাদের এখনও এমন কোনো আধুনিক ও কার্যকর বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই, যা আমাদের আকাশকে সুরক্ষিত করতে পারে।

আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা

তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে রাশিয়াকে বিরক্ত না করার যে সিদ্ধান্ত তেলআবিব নিয়েছে, তা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে অংশীদারিত্বকে আরও বেশি সক্ষম ও কার্যকরী করে তুলছে।

জেলেনস্কি বলেন, নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ শেষ করার পর, রাশিয়া এখন অন্য দেশ থেকে অস্ত্র খুঁজছে। এটি তারা ইরানে খুঁজে পেয়েছে। ইরান কি শুধু অর্থের বিনিময়ে তা সরবরাহ করছে? সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে রাশিয়ার সহায়তার বিনিময়ে তারা মস্কোকে সহায়তা করছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি আপনারা সেই সময়ে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, তাহলে রাশিয়ার সাথে ইরানের এ জোটটি গঠিত হতো না। ২০১৪ সালে যখন রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে প্রথম হামলা চালিয়েছিল, তখনই আপনাদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার ছিল। জেলেনস্কি বেশ কয়েকবারই ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে, ইসরাইল ইউক্রেনকে বেশ কয়েকবারই মানবিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ভয়ে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা থেকে বিরত রয়েছে। গতকালই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ তার ইউক্রেনের প্রতিপক্ষ ওলেক্সি রেজনিকভকে আবারো জানিয়ে দেন, ইসরায়েল ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না।

জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়া ইরান থেকে প্রায় দুই হাজার শাহেদ-১৩৬ কামিকাজে ড্রোন অর্ডার করেছিল, যা পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনে হামলা চালানোর সময় ব্যবহৃত হয়েছে। তবে ইরান একেবারে শুরু থেকে যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে কোনো ধরনের অস্ত্র দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ইরান কোনোভাবেই ইউক্রেনের যুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য কোন পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করেনি। বরং ইরানের নীতি হল যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে উভয় পক্ষকে অস্ত্র দেওয়ার বিরোধিতা করা।