মিয়ানমারে বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৮০

মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০০ জন। মিয়ানমারের অন্যতম বৃহত্তম জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে দেশটির বিমানবাহিনী হামলা চালালে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই সংখ্যালঘু কাচিন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। খবর বিবিসি।

মিয়ানমারের সেনা বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত অনুষ্ঠানস্থল

কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির মুখপাত্র কর্নেল নাও বু জানান, তাদের স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের ৬২ বর্ষপূর্তিতে ২৩ অক্টোবর, রোববার রাতে তারা মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৯৫০ কিলোমিটার উত্তরে একটি প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চল হাপাকান্ত শহরের অং বার লে গ্রামে একটি কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন। এতে সংগঠনটির নেতা-কর্মীসহ প্রায় পাঁচশজন উপস্থিত ছিলেন।

দেশটির সরকারি বাহিনী সেখানেই বিমান হামলা চালায়। এর আগে কোনো ধরনের সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়নি। বরং হামলার পর আহতদের হাসপাতালে নিতেও বাধা দেয় সেনাবাহিনী। প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল, সেনাবাহিনীর হামলায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির কর্মকর্তারা জানান, মৃতের সংখ্যা ৮০-তে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে কাচিন অফিসার, কাচিন সৈন্য, সঙ্গীতশিল্পী, জেড খনির ব্যবসার মালিক ও বেসামরিক ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দুইজন কাচিন যোদ্ধা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাতে কনসার্ট চলাকালে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটায় সেখানে তিনটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। এ হামলায় কমপক্ষে চারজন জনপ্রিয় শিল্পীর প্রাণহানীসহ ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।

মিয়ানমারের কাচিন এলাকায় মূল্যবান পাথরের খনি রয়েছে। ফলে এলাকাটির দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাচিন বিদ্রোহী এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলে আসছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চিকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসে জান্তা সরকার। তখন জান্তাবিরোধী সংগঠনগুলোর সাথে হাত মেলায় কাচিন বিদ্রোহীরাও। এরই প্রতিশোধ নিতে সেনাবাহিনী তাদের কনসার্টে হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির মুখপাত্র কর্নেল নাও বু বলেন, মর্মান্তিক এ হতাহতের ঘটনায় কাচিন পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

এদিকে মিয়ানমার সংকট নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি শীর্ষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। আসিয়ান সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকের মাত্র তিনদিন আগে এমন ভয়াবহ হামলা চালালো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।