ইয়েমেনে সন্ত্রাসী পরিকল্পনা, জার্মানিতে দুই সাবেক সৈন্যের সাজা

ইয়েমেনে ভাড়াটে বাহিনী গঠনের পরিকল্পনার অভিযোগে জার্মান সশস্ত্র বাহিনী বুন্ডেসভেহরের সাবেক দুই সদস্যকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর্থিক লোভ ও খ্রিস্টান মৌলবাদী ধ্যান-ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা দেড়শ সদস্যের বাহিনী গঠন করে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। স্টুটগার্টের উচ্চতর আঞ্চলিক আদালত গতকাল তাদের সাজা ঘোষণা করেন। খবর ডয়েচে ভেলে।

ভাড়াটে বাহিনী নিয়ে হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকা দখলের পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্তরা

প্রসিকিউটররা জানান, সাজাপ্রাপ্ত দুই সাবেক সৈন্য জার্মান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত সৈন্যদের নিয়ে একটি ভাড়াটে বাহিনী গঠন করতে চেয়েছিলেন। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে তারা হুথি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকার একটি অংশ দখলের পরিকল্পনা করেন। এজন্য তহবিল চাইতে তারা সৌদি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের পরিকল্পনা সফল হলে বেসামরিক প্রাণহানি ঘটতে পারত।

আদালত সন্ত্রাসী পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক লালসার দুইটি পৃথক অভিযোগে দুই সাবেক সৈন্যকে এক বছর ছয় মাস ও এক বছর দুই মাস করে সাজা দিয়েছেন। বাদি-বিবাদি উভয়পক্ষ আপিলের অধিকার নাকচ করায় এ সাজা চূড়ান্ত হতে চলেছে।

অভিযোগে বলা হয়, ৬১ ও ৬৩ বছর বয়সী দুই অবসরপ্রাপ্ত সৈন্য খ্রিস্টান মৌলবাদী বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে ইয়েমেনে হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা করেন। এসব বিষয়ে তারা একজন গণকের নির্দেশনাও অনুসরণ করছিলেন। তাদের আর্থিক উদ্দেশ্যও ছিল। সৈন্যদের প্রতি মাসে ৪০ হাজার ইউরো বেতন দিতে তারা একটি বাজেট তৈরি করেছিল।

অভিযুক্তদের একজন তাদের ভাড়াটে বাহিনীর জন্য তহবিল সংগ্রহে সৌদি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। অপরজন জার্মান বাহিনীর চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত সৈন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুইজনই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন। অভিযুক্তরা কিছুই অর্জন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন আদালতের প্রিসাইডিং জাজ।

জার্মানির ফেডারেল পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় এ রায়কে তাৎপর্যপূর্ণ অভিহিত করে বলেছে, আদালত এটা স্পষ্ট করেছেন যে দেশের বাইরে সশস্ত্র যুদ্ধে জড়ালে জার্মান সৈন্যদের শাস্তি পেতে হবে।

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। শিয়া হুথি বিদ্রোহীরা দেশটির সৌদি সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। ইয়েমেনের বেশিরভাগ এলাকা হুথিদের নিয়ন্ত্রণে। হুথিদের নিজস্ব প্রশাসন থাকলেও ইরান ছাড়া কোনো দেশের স্বীকৃতি পায়নি তারা।