পুতিন-বাইডেন বৈঠক চায় মার্কিন আইনপ্রণেতারা

রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসের ৩০ জন সদস্য। ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, কিয়েভকে যে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তার পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ দ্বিগুন করতে স্বপ্রণোদিত কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট।

রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৩০ সদস্য

হোয়াইট হাউসকে লেখা চিঠিতে আইনপ্রণেতারা বলেছেন, কূটনীতির বিকল্প হলো প্রলম্বিত যুদ্ধ, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনিশ্চয়তা এবং বিপর্যয়কর ও অজানা ঝুঁকি। যুদ্ধের বিপর্যয়কর পরিণামগুলো ক্রমশ ইউক্রেনের বাইরে বহুদূর পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য ও গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। বৈশ্বিক বাজারে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গম, সার ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। এছাড়া রাশিয়ার পারমাণবিক হামলার বিপদ তো আছেই।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা এরইমধ্যে যুদ্ধে প্রাণহানি ও এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তচ্যুত হলেও প্রলম্বিত যুদ্ধ এড়াতে রাশিয়ার সঙ্গে নিয়মিত সংলাপের উদ্যোগ না থাকায় বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাইডেন প্রশাসন বারবার বলে এসেছে যে, কখন-কোথায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হবে তা কেবল কিয়েভের কর্মকর্তারাই নির্ধারণ করবেন।

মার্কিন কংগ্রেসের প্রগ্রেসিভ ককাসের নেতা প্রমীলা জয়পালের নেতৃত্বে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেসের সবচেয়ে পরিচিত ও স্বপষ্টভাষী কিছু সদস্য। এদের মধ্যে রয়েছেন জেমি রাসকিন, আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ, করি বুশ, রো খান্না ও ইলহান ওমর। কংগ্রেসের এ গ্রুপটি সংখ্যালঘু হলেও নিঃসন্দেহে তাদের উদ্যোগ রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনায় যেতে বাইডেন প্রশাসনের উপর চাপ আরও জোরালো করবে।

মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই ইউক্রেনের যুদ্ধে অর্থায়নের বিপক্ষে জনমত বাড়ছে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইউরোপ অঞ্চলকেও আসন্ন শীতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে। নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন। রিপাবলিকানরা এরইমধ্যে বলেছে যে কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পেলে তারা ইউক্রেনকে দেওয়া অর্থ সহায়তা কমাবে।

রাশিয়া বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন যে মস্কো কেবল আরেকটি পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেই আলোচনায় বসবে। কংগ্রেসের প্রগতিশীল সদস্যরা তাই অনতিবিলম্বে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরুর উপর জোর দিয়েছেন। যদিও ইউক্রেনকে পাশ কাটিয়ে আলোচনায় বসতে হোয়াইট হাউস অনীহা প্রকাশ করেছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, আমরা কংগ্রেস সদস্যদের সুচিন্তিত উদ্বেগকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে ইউক্রেনীয়দের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া আমরা রুশ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাব না। সাফল্য কাকে বলে অথবা কখন আলোচনা করতে হবে তা জেলেনস্কি ঠিক করবেন, কেননা এটা তার দেশ।