লাহোর থেকে ইমরান খানের লংমার্চ শুরু

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার পূর্বঘোষিত লংমার্চ শুরু করেছেন। শাহবাজ শরীফ সরকারের পদত্যাগ ও অবিলম্বে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে এ লংমার্চে যোগ দিয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআইর লক্ষাধিক নেতাকর্মী। লাহোরের লিবার্টি চক থেকে আজ শুক্রবার দুপুরে শুরু হওয়া লংমার্চ ছয়দিন পর রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছার কথা রয়েছে।

লংমার্চের শুরুতে লাহোরের লিবার্টি চকে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইমরান খান

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ লংমার্চে বিশৃঙ্খলা হলে আয়োজকদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। লংমার্চ ঠেকাতে ইসলামাবাদ পুলিশ ১৩ হাজার কর্মকর্তা মোতায়েন করেছে। পিটিআই বলেছে, লংমার্চ পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি এবং এতে অংশগ্রহণকারীরা নির্ধারিত এলাকার বাইরে সমাবেশ ও অবস্থান করবে না।

লংমার্চ শুরুর আগে লিবার্টি চকে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ইমরান খান চলতি সপ্তাহে কেনিয়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া পাকিস্তানি সাংবাদিক আরশাদ শরীফের নামে লাহোরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। শহীদ আরশাদ শরীফ ইউনিভার্সিটি অব জার্নালিজম নামের প্রতিষ্ঠানটির কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলে তিনি জানান।

পিটিআই দলীয় সিনেটর আজম সোয়াতির উপর নির্যাতনকারী দুই আইএসআই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, প্রবীণ রাজনীতিক আজম সোয়াতিকে বেআইনিভাবে আটকের পর বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি নির্যাতনকারীদের নাম উল্লেখ করেছেন। এরা হলো ফাহিম ও ফয়সাল। ডার্টি হিরো নামে পরিচিত এ জুটি ইসলামাবাদে পদায়নের পর থেকে মানুষের উপর নির্যাতন করছে। এরা শাহবাজ গিলের উপরও একই কায়দায় নির্যাতন করেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর আগে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আজম সোয়াতি তার উপর নির্যাতন ও বিচার-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর অভ্যন্তরীণ উইংয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসির ও আইএসআই অভ্যন্তরীণ উইংয়ের ইসলামাবাদ সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ফাহিম রাজার নাম প্রকাশ করেন।

পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান তার বক্তৃতায় বলেন, বিলাওয়াল ভুট্টো আইএসআইর করাচি সেক্টর কমান্ডারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার পর ওই কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন এই দুই কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিন। এরা আপনার দুর্নাম সৃষ্টি করছে।

সাংবাদিক আরশাদ শরীফ হত্যার ঘটনায় আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আহমেদ আনজুম ও আইএসপিআর ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল বাবর ইফতিখারের নজিরবিহীন সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে খান বলেন, এই দুই কর্মকর্তার সংবাদ সম্মেলন ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এটা শেখ রশিদের চেয়েও বেশি রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল। আইএসআই ডিজিকে বলছি, শোনেন, আমি শুধু দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠানের কথা ভেবে চুপ করে আছি। আমি আমার দেশকে ধ্বংস করতে চাই না।

তিনি বলেন, আমি সব কথার জবাব দিতে গেলে দেশের প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানি হবে। এজন্য চুপ আছি। আমি কখনো অসাংবিধানিক কিছু চাইনি। আমি চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমি চাই ওয়াশিংটন, আমেরিকা অথবা অন্য কেউ নয়, দেশের জনগণ দেশের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।