ব্রাজিলের ক্ষমতায় ফিরলেন লুলা ডি সিলভা

প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর সামান্য ব্যবধানে জয় নিয়ে ব্রাজিলের ক্ষমতায় ফিরলেন দেশটির সাবেক বামপন্থি প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। ৩০ অক্টোবর, রোববার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে তিনি ৫০.৮ শতাংশ ভোট পান। এদিকে ভোটের এ ফল আসার পরপরই বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো একে জাালিয়াতি বলে উল্লেখ করেছেন। খবর আলজাজিরা।

বিজয়ের পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে লুলা

ব্রাজিলের স্থানীয় সময় রোববার সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট শেষ হয় বিকেল পাঁচটায় (বাংলাদেশ সময় রাত দুইটা)। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট হওয়ায় খুব দ্রুতই ফল পাওয়া যায়। দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষের মতে, রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে লুলা ডি সিলভা ৫০.৮ শতাংশ ভোটের বিপরীতে জেইর বলসোনারো পেয়েছেন ৪৯.২ শতাংশ ভোট। নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ হওয়ার কথা আগামী বছরের জানুয়ারিতে।

নির্বাচনে জিতেই লুলা দা সিলভা বিভক্ত ব্রাজিলের প্রতি শান্তি ও ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রাজিল এখন আন্তর্জাতিক বৃত্তের বাইরে নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্রাজিলের রাজনৈতিক সংস্কারের জন্যেই তিনি ফিরে এসেছেন। তার জয়কে তিনি ব্যক্তিগত বা দলীয় জয় না বলে বরং গণতান্ত্রিক চর্চার সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেন।

দুই প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারো

তিনি বলেন, সংকটময় মুহূর্তে দেশের হাল ধরছি। তবে দেশের সবার সহযোগিতায় লাতিন আমেরিকার দেশটিতে আবারও গণতন্ত্র-শান্তি-সাম্যের সমাজ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

উল্লসিত জনতাকে ৭৭ বছর বয়সী লুলা বলেন, প্রথমত, আমি এখানে আমার সাথে থাকা সমস্ত কমরেডদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের লড়াই ছিল রাষ্ট্রের মেকানিজমের বিরুদ্ধে। আমরা তাতে সফল হয়েছি। যারা ভোট দিতে গেছেন তাদের প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভোট গণনার শুরুর দিকে বোলসোনারো এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে লুলা এগিয়ে যেতে শুরু করলে রাজধানী সাও পাওলোর শহরের মূল কেন্দ্রের রাস্তাগুলোতে লুলার সমর্থকরা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তাদের বাজানো হর্নে রাজধানীজুড়ে অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তার সমর্থকরা বলতে থাকে, এটা ঘুরে গেছে!

লুলার বিজয়ের খবর শুনে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মারানহাও রাজ্যের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী লুইজ কার্লোস গোমেস বলেন, তিনি দরিদ্রদের জন্য সেরা, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। আমরা সবসময় তার জন্য মুখিয়ে ছিলাম।

গত মেয়াদে বলসোনারো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ব্রাজিলের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে তার সময়ে পৃথিবী বিখ্যাত বন আমাজন ব্যাপকভাবে উজাড় হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এর আগে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২ অক্টোবর। নিয়ম অনুযায়ী সরকার গঠনে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোটের দরকার হলেও সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারো কেউ তা অর্জন করতে পারেননি। লুলা পান ৪৮ শতাংশ ভোট ও বলসোনারো পান ৪৩ শতাংশ ভোট। ফলে নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় দফায়। রোববার তারই ভোট নেওয়া হলো।