‘ব্রিটেনে মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনা ২৮ শতাংশ বেড়েছে’

মুসলিমবিদ্বেষের বিভিন্ন ঘটনায় ব্রিটিশ সরকারের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সে দেশের রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতারা। ইসলামোফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মানথের শুরুতে লেবার পার্টিও বেশ কয়েকজন এমপি এসব প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলেছেন, বিগত বছরে ব্রিটেনে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যতো হেইট ক্রাইম হয়েছে, তার মধ্যে ৪২ শতাংশ ঘটনার ভিকটিম মুসলিম। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ব্রিটেনে মুসলিমবিদ্বেষী হেইট ক্রাইমের ঘটনা ২৮ শতাংশ বেড়েছে বলেও এমপিরা উল্লেখ করেন।

ইসলামোফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মানথকে সচেতনতা সৃষ্টির উপলক্ষ হিসেবে কাজ লাগানোর কথা বলছে ব্রিটেনের লেবার পার্টি

মুসলিমবিদ্বেষের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্রিটেনের একদল মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠক ২০১২ সাল থেকে ইসলামোফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মানথ পালন করছেন। ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতারাও এ মাসটিকে সচেতনতা সৃষ্টির উপলক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে।

ইসলামোফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মানথ উপলক্ষে এক বাণীতে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান হেইট ক্রাইমে আক্রান্তদের কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বের অন্যতম বৈচিত্রপূর্ণ নগরীর মেয়র হিসেবে আমি ইসলামোফোবিয়া ও সব ধরনের হেইট ক্রাইমের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি। সব ধরনের হেইট ক্রাইমের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অ্যাপ্রোচ নিয়ে আমি লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখবো।

লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিন এমপি বলেছেন, ইসলামোফোবিয়া আসে মুসলিম সম্প্রদায়কে অবজ্ঞা করে বলা উক্তি থেকে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পতনশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বলির পাঠা বানানোর নীতি থেকে এবং বৈষম্য সহ্য করে যে দল, তাদের থেকে। এবারের ইসলামোফোবিয়া অ্যাওয়ারনেস মানথ হোক কাল-পরিবর্তনের সূচনা।

লেবার পার্টির এমপি আফজাল খান বলেছেন, ব্রিটিশ সমাজে মুসলমানরাই ধর্মীয় কারণে সবচেয়ে বেশি বিদ্বেষ ও বৈষম্যের শিকার। অনেক সময় সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মন্তব্যও মুসলিমবিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে। মুসলিমবিদ্বেষের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ ও বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থান জানতে চেয়ে বা অভিযোগ জানিয়ে বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেশ কয়েকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মুসলিমবিদ্বেষের বিষয়টি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি মোটেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। ব্রিটেনে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত যত হেইট ক্রাইম সংঘটিত হচ্ছে, বছরের পর বছর তার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভিকটিম হয়ে আসছেন মুসলিমরা। ২০১৮ সাল থেকে একের পর এক প্রধানমন্ত্রী আসছেন। কিন্তু ইসলামোফোবিয়া ইস্যুতে আমার চিঠিগুলোর কোনো জবাব দেওয়া হচ্ছে না।

ছায়া মন্ত্রিসভার নারী ও সমতা বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াসমিন কুরেশি এমপি বলেন, ইসলামোফোবিয়ার ব্যাধি ক্রমশ আরও বেশি জায়গায় সংক্রমিত হচ্ছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে হেইট ক্রাইমের ঘটনা প্রতি বছর উত্তরোত্তর বাড়ছে। কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রী নিজেদের তৈরি করা অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ইসলামোফোবিয়া ঠেকানোর বিষয়টি তাদের কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে।