যুক্তরাষ্ট্র-দ. কোরিয়ার মহড়া, ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে কিমের সতর্কবার্তা

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান মহড়ার মধ্যেই তিনটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। ২ নভেম্বর, বুধবার সকালে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় এলাকা ওনসান থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় চোখ রাখছেন দুই ব্যক্তি

জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ জানান, উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র কোরিয়ার পূর্ব সমুদ্র সীমান্তের ২৬ কিলোমিটার এবং আরেকটি দক্ষিণ কোরিয়ার উলেউং দ্বীপের ১৬৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে আন্তর্জাতিক জলসীমায় গিয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় উলেউং দ্বীপে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করেছে।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের উস্কানিকে সহ্য করবে না এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে তাদের সাথে কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে। একই সাথে দক্ষিণ কোরিয়া উত্তরের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে বলেও তিনি জানান।

দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বিমান মহড়া

উত্তর কোরিয়া তার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ও সিউলের যৌথ সামরিক মহড়ার বিষয়ে একটি সতর্কতা জারির উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং এ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রায় সপ্তাহব্যাপী ওই মহড়ায় দুই দেশের ২৪০ যুদ্ধবিমান অংশ নিয়ে বোমা হামলা ও তার প্রতিরক্ষার অনুশীলন করছে।

বুধবার ভোরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কিম জং উনের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত এবং ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারি পাক জং চোন তথাকথিত ভিজিল্যান্ট স্টর্ম এয়ার ফোর্স ড্রিলকে আক্রমণাত্মক ও উত্তেজক বলে অভিহিত করেন। একই সাথে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করা হবে বলে দক্ষিণ কোরিয়া যে হুমকি দিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।

পাক জং চোন বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করার চেষ্টা করে, তবে তারা কোনো বিলম্ব ছাড়াই সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ কৌশলগত মিশন পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সেক্ষেত্রে একটি ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মূল্য দিতে হবে। এই হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর কোরিয়া এ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো।

এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা তাকে আত্ম-ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা দৃঢ়ভাবে বলেছেন, চলমান মহড়া প্রতিরক্ষামূলক এবং উত্তর কোরিয়ায় আক্রমণ করার তাদের কোনো ইচ্ছা নেই। বরং এটা তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, উত্তর কোরিয়ার প্রতি আমাদের কোনো শত্রুতা নেই এবং আমরা তাদেরকে গুরুতর ও টেকসই কূটনীতিতে জড়িত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। তবে একই সময়ে, আমরা পিয়ংইয়ংয়ের বে আইনি অস্ত্র কর্মসূচির অগ্রগতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলার ক্ষমতা সীমিত করতে মিত্র ও অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব।