‘যুদ্ধ মুনাফাখোর’ জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে বাইডেনের হুঁশিয়ারি

বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের মধ্যে রেকর্ড মুনাফা করায় জ্বালানি সংস্থাগুলোকে ‘যুদ্ধ মুনাফাখোর’ বলে আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার জেরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার সুযোগে বিপুল পরিমাণ মুনাফা করতে থাকা বিভিন্ন তেল-গ্যাস কোম্পানিকে লক্ষ্য করে বাইডেন এ মন্তব্য করেন।

জো বাইডেন

গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার সুযোগে এসব কোম্পানি সীমাহীন মুনাফা কামিয়ে নিচ্ছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের হাতে দরকারি জ্বালানি কেনার মতো টাকা নেই। যদি এসব কোম্পানি তাদের মুনাফার সামান্য কিছু অংশও জনগণের জন্য ব্যয় করত, তাহলে আজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি লিটার তেলের দাম হতো মাত্র ৫০ সেন্ট।

মার্কিন এসব কোম্পানির মালিকদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, তারা কেবল মুনাফা অর্জনের পেছনে ছুটছে। যুদ্ধের সুযোগে এক একটি কোম্পানি বিশাল মুনাফা অর্জন করেছে। অথচ নিজের দেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কোনো তাগিদ তারা অনুভব করছে না।

অ্যামেরিকান কোম্পানিগুলো যুদ্ধের সুযোগে প্রচুর মুনাফা করেছে

বাইডেন বলেন, তাদেরকে হয় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে কম দামে জ্বালানি বিক্রি করতে হবে, দেশের তেল-গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় তারা যে পরিমাণ মুনাফা করেছে, তা থেকে সরকারকে উচ্চহারে কর দিতে হবে। একই সাথে যেন অন্যান্য বিধিনিষেধও যেন তাদের ওপর জারি করা হয়, সেজন্য আমি নিজে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করব।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার জেরে রাশিয়ার ওপর জারি করা বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রেও ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। এক জরিপে বলা হয়েছে, সেখানে খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর অন্যান্য দেশের মতো জ্বালানি পণ্যের তেমন ঘাটতি দেখা না দিলেও মূল্য হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

মার্কেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মার্কিন তেল ও গ্যাস কোম্পানি এক্সনমোবিল, শেভরন, শেল, বিপি, কনোকোফিলিপস ও টোটালএনার্জি ২০২১ সালের মোট যত মুনাফা করেছিল এ বছরের দুই প্রান্তিকে তার বেশি মুনাফা অর্জন করে নিয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছে। প্রথম দিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া এ সহায়তার ব্যাপারে সবাই সমর্থন করলেও দিন দিন পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বিরোধী দল রিপাবলিকান সদস্যদের পাশাপাশি বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও অনেকে এ সহায়তা বন্ধের পক্ষে মত দিচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিষয়টির জোর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।