ইউক্রেন: খেরসনে লুটপাট চালাচ্ছে রুশ বাহিনী

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে রুশ বাহিনী লুটপাট চালাচ্ছে এবং সেখানকার বাড়িঘর দখলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ সরকার। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইল পোডোলিয়াক গতকাল সোমবার এক টুইটে এ কথা জানান। খবর আলজাজিরা।

খেরসন থেকে সরে যাচ্ছে বেসামরিক নাগরিকরা

পোডোলিয়াক তার টুইটে লেখেন, যখন খেরসনের বাসিন্দাদের তাদের বাড়ি থেকে জোর করে নির্বাসিত করা হচ্ছে, উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তখন রুশ সেনাসহ সংশ্লিষ্টরা তাদের সবচেয়ে পছন্দের কাজটি করছেন। আর সেটি হচ্ছে খেরসনের বাসিন্দাদের বাড়িঘরে লুটপাট।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, রুশ বাহিনী বেসামরিক পোশাকের ছদ্মবেশে বেসামরিক লোকদের বাড়িঘর দখল করছে এবং সেখানেই অবস্থান করে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

ব্ল্যাকআউটের কবলে ইউক্রেন

ইউক্রেনের হামলার হুমকির প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন ধরে রাশিয়া তাদের দখলকৃত খেরসন শহর থেকে বেসামরিক লোকদের বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তিন লাখ লোকের এ শহরটি গত ৪৮ ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎ ও পানিবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে পুরো শহরটি একেবারে ঠান্ডা ও অন্ধকার হয়ে গেছে।

খেরসনের এ পরিস্থিতির জন্য রাশিয়ার কর্মকর্তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর নাশকতাকে দায়ী করে বলেন, তারা বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা দাবি করেন, রুশ সেনারা হামলা চালিয়ে দেড় কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন ভেঙে দিয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী এলাকাটি পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত সম্ভবত বিদ্যুৎ ফিরে আসবে না।

রাশিয়া কয়েকদিন ধরেই খেরসনের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। তবে কিয়েভ রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে জোরপূর্বক নির্বাসন ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইউক্রেনের এ অভিযোগ অস্বীকার করে  রাশিয়া জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তার জন্যই বাসিন্দাদের দূরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এ সময় তারা বেসামরিক লোকজনের জিনিসপত্র অপব্যবহারের অভিযোগও অস্বীকার করে।

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে রাশিয়া গণভোটের মাধ্যমে খেরসনসহ চারটি অঞ্চল নিজেদের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে অক্টোবরের শুরু থেকেই ইউক্রেন খেরসনে পাল্টা হামলা চালিয়ে অনেকটুকু জায়গা দখল করে নেয়। কিয়েভ অবশ্য রাশিয়ার অধিকৃত সমস্ত অঞ্চল ফিরে পাবে বলে আশা করছে।

এদিকে, ইউক্রেন গতকাল সোমবার জানিয়েছে, তারা পশ্চিমা সামরিক মিত্রদের কাছ থেকে আরও বেশি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ জানান, ইউক্রেন ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (নাসামস) এবং ইতালীয় অ্যাসপিড এয়ার ডিফেন্স পেয়েছে। জার্মানি এসব সরবরাহ করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেজনিকভ বলেন, নাসামস ও অ্যাসপাইড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমাদের আকাশকে আরো বেশি নিরাপদ করে তুলবে।