রেকর্ড গরমে ইউরোপে ১৫ হাজার প্রাণহানি

চলতি বছর ইউরোপে দাবদাহে কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস ছিল ইউরোপের জন্য স্মরণকালের উষ্ণতম সময়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।

গত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে পর্তুগাল, জার্মানি, স্পেন ও ব্রিটেনে কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ দাবদাহে প্রাণ হারিয়েছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, চলতি বছর তাপপ্রবাহ ও উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত ইউরোপে কমপক্ষে ১৫ হাজার প্রাণ হারিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে জার্মানি ও পর্তুগালে। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ বছর ইউরোপে যে খরা দেখা দিয়েছে, তার নজির মধ্যযুগের পর দেখা যায়নি।

ইউরোপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হান্স ক্লুগ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা যে তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি তাতে অনুমান করা যায় যে নির্দিষ্টভাবে কেবলমাত্র অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে ইউরোপে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে স্পেনে প্রায় ৪ হাজার, পর্তুগালে এক হাজারের বেশি ও যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের দাবদাহে মৃত্যুর কথা জানিয়েছে এসব দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ। একইভাবে জার্মানির স্বাস্থ্য বিভাগ জুন-আগস্ট সময়কালে তাপমাত্রার কারণে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু রেকর্ড করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, অন্যান্য দেশ থেকে দাবদাহে মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত আসতে থাকলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রেকর্ড মাত্রার খরা ও অনার্দ্র আবহাওয়ার কারণে ইউরোপের শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত অঞ্চলে ব্যাপক হারে ফসল পুড়ে গেছে, দাবানলের সংখ্যা ও মাত্রা বেড়ে গেছে এবং মহাদেশীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের উপর কঠিন চাপ পড়েছে।

জুন ও জুলাই মাসে ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। ইউরোপের অনেক শহরেই এবারের গ্রীষ্মে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রত্যক্ষভাবে দাবদাহে প্রাণহানি যেমন হয়েছে, তেমনি ইউরোপে অন্যান্য বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার প্রায় ২৪ হাজার অতিরিক্ত মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইউরোপ অঞ্চলে আবহাওয়াজনিত কারণে মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো হিট স্ট্রেস অর্থাৎ যখন দেহ নিজে থেকে তাপ কমানোর সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখনই মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। এছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিসে ভূগছেন, তাদের জন্যও বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে এমন চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে দাবদাহ ও অন্যান্য চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া আগামী বছরগুলোতে আরও বেশি রোগ ও মৃত্যুর কারণ হবে।