নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে মিলল 'বিস্ফোরকের চিহ্ন'

বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস বরবরাহের মূল পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ১ ও ২। এই পাইপলাইন দুটি ফেটে গ্যাস বের হওয়ার ঘটনা পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। এই ঘটনার তদন্তকারী সুইডিস কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা দুর্ঘটনাস্থলে বিস্ফোরকের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছে।

নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন

একজন সুইডিশ প্রসিকিউটর বলেছেন, এই তদন্ত নিশ্চিত করে যে, পাইপলাইনে নাশকতা ঘটানো হয়েছে। সুইডিশ প্রসিকিউশন অথরিটি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণ স্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বেশ কিছু নমুনায় বিস্ফোরকের চিহ্ন পাওয়া গেছে। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবর।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই তদন্ত অত্যন্ত জটিল এবং ব্যাপক। চলমান তদন্তে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা যায় কিনা তা নির্ধারণ করা হবে। পাইপলাইনের চারটি ছিদ্র তদন্ত করা হয়েছে। এই পাইপলাইন ইউক্রেন সংকটে জরুরি জ্বালানি সরবরাহ লাইন হয়ে উঠেছে।

ডেনমার্ক গত মাসে জানিয়েছিল, প্রাথমিক তদন্তে পাইপলাইনে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটার আলামত পাওয়া গেছে। তবে প্রসিকিউটরের কার্যালয় বিস্তারিত বিষয় জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এখন তদন্তকারীরা উপসংহারে পৌঁছেছেন, পাইপলাইন দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু কোনো দেশ বা গ্রুপের ওপর দোষ চাপানো হয়নি।

খবরে বলা হচ্ছে, ডেনিশ এবং সুইডিশ কর্তৃপক্ষ পাইপলাইনে নাশকতার বিষয়ে তাদের তদন্ত শেষ করেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিস্তারিত ফলাফল শিগগির প্রকাশ করা হবে না। সুইডেনের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, বিস্ফোরণটি নাশকতার ফলাফল ছিল।

এদিকে অত্যাবশ্যকীয় জ্বালানি পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটালে কারা লাভবান হতে পারে, তা নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে। দুই পাইপলাইন বাল্টিক সমুদ্র তীর বরাবর স্থাপিত এবং গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একইসাথে নাশকতা চালানো হয়। এতে পাইপের ছিদ্র দিয়ে সমুদ্রের পানিতে গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পরে তড়িঘড়ি মেরামত করা হয়।

এই অঞ্চলের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে বিরাজমান উত্তেজনার মধ্যে কারা এই নাশকতা করতে পারে, তা হঠাৎ করে বলা সম্ভব না। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর মিলিটারি স্টাডিজের বিশ্লেষক জেনস ওয়েনজেল ​​ক্রিস্টোফারসেন বলেন, আমি নিশ্চিত সুইডিশরা এত তাড়াতাড়ি তদন্তের চূড়ান্ত ফল শেয়ার করবে না। তারা শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার আগে কোনো কিছুই জানাতে চায় না।

ক্রিস্টোফারসেন টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, চূড়ান্ত তদন্ত প্রকাশ করা হলে বাল্টিক সাগরে সামগ্রিক নিরাপত্তা আরও খারাপ হতে পারে। বাল্টিক সাগরকে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তির সাগর বলা হত। কিন্তু সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্য পদ পাওয়ার পর থেকে এটিকে ন্যাটো সাগর বলা হচ্ছে।