বেপরোয়া হুথিরা, ফের ইয়েমেন যুদ্ধের শঙ্কা!

ইয়েমেন যুদ্ধের দুই পক্ষ হুথি বিদ্রোহী ও সৌদি সামরিক জোটের মধ্যে যুদ্ধবিরতি গত মাসে শেষ হয়। এর পর তা নবায়ন করতে ব্যর্থ হয় জাতিসংঘ। এই যুদ্ধবিরতি নবায়নে ভূমিকা রাখতে চেয়েছিল ওমান। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নবায়নে হুথিদের রাজি করতে পারেনি ওমান। দেশটির চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। হুথিরা এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সামরিক জোটের সমর্থক সরকারি কাউন্সিল নিয়ন্ত্রিত এলাকার নানা স্থাপনায় হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ইয়েমেন যুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার শঙ্কা জেগেছে। আরব নিউজের খবর।

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হুথি বিদ্রোহীরা

ওমানি মধ্যস্থতাকারীদের ব্যর্থতার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইয়েমেনি সরকার তেলক্ষেত্রে হামলার জন্য হুথিদের খুবই চাপে রেখেছে। সরকার হুথিদের শাস্তি দিতে চায়। কিন্তু সরকারের এই অবস্থানে ক্ষিপ্ত হুথিরা। এ কারণে তারা ওমানি প্রচেষ্টায় সাড়া দেয়নি। ১৯ নভেম্বর, শনিবার দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি নবায়নের চেষ্টা করেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত হ্যান্স গ্রুন্ডবার্গ। হুথিরা দাবি জানিয়েছে, তাদের অঞ্চলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দিতে হবে। অন্য দিকে সরকারের দাবি, হুথিদের পক্ষ থেকে দেওয়া তাইজের অবরোধ যেন তুলে নেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, ওমানিরাও চেষ্টা চালালো যুদ্ধবিরতি নবায়নের, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

খবরে বলা হচ্ছে, ইয়েমেনি সরকার বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলোকে সানা বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া হুথি-নিয়ন্ত্রিত হোদেইদাতে ৫০টিরও বেশি জ্বালানিবাহী জাহাজ প্রবেশের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এরপরও হুথিরা তাইজ অবরোধ অব্যাহত রেখেছে। তারা শহরের আবাসিক এলাকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। হুথিদের এসব পদক্ষেপ যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন।

পরিস্থিতি আরও খারাপ করার জন্য হুথিরা সম্প্রতি দক্ষিণ ইয়েমেনের তেল টার্মিনালগুলোতে ড্রোন হামলা চালায়। এর ফলে প্রথমবারের মতো দেশটির তেলের চালান বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়েছে এবং হুথি হামলা বেড়েছে, এজন্য চাপের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিল সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করার চিন্তা করছে ।

ওই ইয়েমেনি কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক নেতা, সামরিক কর্মকর্তা এবং এমনকি কিছু কাউন্সিল সদস্য অনুরোধ করেছেন, হুথিদের শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে বাধ্য করা হোক। এতসব চাপের মুখেও হুথিরা হামলা বৃদ্ধি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচক্ষণতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ আওয়াধ বিন মুবারক গত শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সেক্রেটারি অফ স্টেট বারবারা এ লিফের সাথে সাক্ষাত করেছেন। তিনি হুথিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনি সরকারের শাস্তিমূলক পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দাবি করেছেন। হুথিদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার অনুরোধ করেছেন।