মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে চীনের ধাওয়া!

দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি যুদ্ধজাহাজকে ধাওয়া করে তাড়িয়েছে চীনা নৌবাহিনী। মার্কিন নৌবাহিনীর গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিল আজ সকালে স্পার্টলি দ্বীপের কাছে চীনের জলসীমায় প্রবেশ করলে সেটিকে সতর্ক ও ধাওয়া করা হয় বলে জানিয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। চীনের জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগ অস্বীকার করে মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, চীনের আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। আমরা সেখানে চলাচল অব্যাহত রাখব। খবর সিনহুয়া ও সিএনএন।

মার্কিন গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিলকে ধাওয়া করে চীনা নৌবাহিনী

নিজেদের অফিসিয়াল ওয়েইবো অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে পিএলএ বলেছে, গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিল চীন সরকারের অনুমতি ছাড়া অন্যায়ভাবে চীনের নানশা দ্বীপপুঞ্জের কাছের জলসীমা ও খাঁড়িতে প্রবেশ করে। এ ঘটনায় আবারও দেখা গেল যে দক্ষিণ চীন সাগরে নিরাপত্তা ঝুঁকির সত্যিকার হোতা হলো যুক্তরাষ্ট্র।

পিএলএর সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল তিয়ান জুনলি বলেছেন, অনুপ্রবেশকারী মার্কিন নৌযান দেখতে পাবার পর সেটিকে অনুসরণ, নজরদারি, সতর্ক করতে এবং একপর্যায়ে তাড়িয়ে দিতে পিএলএ সেখানে নৌ ও বিমানশক্তি সমাগম করে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘন। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিকায়ন ও নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

এদিকে মার্কিন নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিল আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় নৌ চলাচলের স্বাধীনতা সংক্রান্ত মহড়া (ফ্রিডম অব নেভিগেশন অপারেশন-এফওএনওপি) পরিচালনা করেছে এবং যেখানে গভীর সমুদ্রের স্বাধীনতা প্রযোজ্য সেখানে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। চীনের আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মান্যতার পরিপন্থী এবং একটি মুক্ত, খোলামেলা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল সম্পর্কে আমাদের দর্শনের বিপরীত।

মার্কিন নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, দুই সপ্তাহ আগে ইন্দোনেশিয়ায় জি২০ সম্মেলন চলাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর এটাই দক্ষিণ চীন সাগওে দুই দেশের নৌবাহিনীর মুখোমুখি হবার প্রথম ঘটনা। ওই বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমাতে সমর্থ হন বলে সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের জানান।

দক্ষিণ চীন সাগরে ১৩ লাখ বর্গমাইল এলাকা এবং ওই সাগর গর্ভের নানশা দ্বীপপুঞ্জের (চীনের বাইরে স্পার্টলি আইল্যান্ডস বা স্পার্টলিজ নামে পরিচিত) প্রায় পুরো এলাকা চীন নিজের বলে দাবি করে। চীন ওই দ্বীপপুঞ্জের কাছে বেশকিছু সামরিক স্থাপনাও নির্মাণ করেছে। দক্ষিণ চীন সাগরের চারপাশে থাকা আরও কয়েকটি দেশ যেমন ফিলিপাইন, ভিয়েতনামেরও স্পার্টলি আইল্যান্ডের ওপর দাবি রয়েছে।

স্পার্টলি আইল্যান্ডের কাছে চলাচল অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, আজকের এফওএনওপি নৌ চলাচলের অধিকার সুরক্ষা এবং সমুদ্রের আইনসম্মত ব্যবহারের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র সব জাতির বিমান চালনা, নৌ চালনা ও কার্যক্রম পরিচালনার অধিকারকে রক্ষা করছে, ঠিক যে কাজটি ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিল করেছে। চীন যা-ই বলুক, আমরা নিবৃত্ত হব না।