নেশা ছাড়াতে মসজিদ কর্তৃপক্ষের অন্যরকম প্রচেষ্টা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের আসাম রাজ্যে দিন দিন মাদকদ্রব্য সেবন ও এর কারবার বেড়েই চলছে। এ অবস্থার অবসানে মাদকের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার মসজিদ ও কবরস্থান কমিটি। তারা জানিয়ে দিয়েছে নেশার কারণে কেউ যদি মারা যায় অথবা মাদক পাচার বা কারবারের সাথে যুক্ত থাকাবস্থায় যদি কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তাহলে তার জানাজায় কেউ অংশ নেবে না।
জানাজা নামাজ, ফাইল ছবি
জানা গেছে, আসামের নগাঁও জেলার জুড়িয়া উদমারী বালুগুটিয়া জুমা মসজিদ ও জুড়িয়া কলোনী জালাহ আঞ্চলিক কবরস্থান কমিটি যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে জুড়িয়া উদমারী বালুগুটিয়া মসজিদ নির্বাহী কমিটিও একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
জুড়িয়া কলোনী জালাহ আঞ্চলিক কবরস্থান কমিটির সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, তাদের এলাকায় বেশ কয়েকজন অবৈধ মাদক কারবারে জড়িত। এ কারণে এলাকার অনেক শিশু-কিশোরও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।
ইমরান বলেন, এলাকার যে সব নারী-পুরুষ মাদক কারবারের সাথে জড়িত, তাদেরকে এর আগেও অনেকবার এসব অবৈধ কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা তাতে গা লাগায়নি। তারা এসবের জন্য কয়েকবার গ্রেপ্তারও হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিন পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও সেই কাজে যুক্ত হয়ে যায়।
পুরো অবস্থা দেখে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শরিয়তবিরোধী কাজে যুক্ত থাকাবস্থায় কোনও ব্যক্তি মারা গেলে তার জানাজা ও কাফন-দাফনে আমরা শামিল হব না। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সমাজকে একটাই বার্তা দিতে চাই। তা হলো, আমরা নেশামুক্ত আসাম চাই।
জুড়িয়া উদমারী বালুগুটিয়া মসজিদ নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুল হক মোড়ল বলেন, তরুণ প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে অন্য কোনো উপায় না দেখে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাদক সেবনের কারণে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকেও কোনো ধরনের সাহায্য করা হবে না। কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের ভালো জীবনের স্বার্থেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এ সিদ্ধান্তের সাথে একমত হয়েছেন স্থানীয়রাও। তারাও এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারকে সহযোগিতা করা আমাদের সবার কর্তব্য।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মে থেকে এই কয় মাসে আসাম রাজ্যে ৯০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মাদক আটক করা হয়েছে। এ সময় তিন হাজারের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাঁচ হাজারের বেশি মাদক কারবারি ও পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এরপরও রাজ্যটিতে থামছে না মাদকের আগ্রাসন। ফলে মসজিদ কমিটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর