পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত রয়েছেন। রুশ নেতা যদি ইউক্রেনে নয় মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী হন, তাহলে তিনি তার সঙ্গে সংলাপে বসতে রাজি আছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন এ কথা বলেন। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

পুতিন যুদ্ধবন্ধে আগ্রহী হলে তার সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত রয়েছেন বাইডেন

জো বাইডেন বলেন, আমি পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত আছি যদি তিনি যুদ্ধ শেষের উপায় খুঁজতে আগ্রহী হন। তবে কথা হচ্ছে তার সঙ্গে সংলাপের আগে আমি বিষয়টি নিয়ে ন্যাটো শরিকদের সঙ্গে পরামর্শ করব।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খোলামেলা ও ইতিবাচক বার্তা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার সম্ভাব্যতা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিনের কর্মকর্তাদের কাছে প্রশ্ন তোলা হলেও স্পষ্ট ইতিবাচক কোনো জবাব আসেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এখনই পুতিনের সঙ্গে বসতে যাচ্ছি, এমন নয়। কারণ এখনো এমন কোনো আভাস পাইনি যে তিনি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চাচ্ছেন। তিনি যদি যুদ্ধ শেষের আগ্রহ দেখান, তাহলে ফরাসি ও ন্যাটো বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে আমি খুশি মনে পুতিনের সঙ্গে বসব তার মনে কি আছে সেটা জানার জন্য।

পুতিনের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে বাইডেনের পক্ষ থেকে এ সবুজ সংকেত এমন সময় এলো যখন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ তিনদিনের সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। জো বাইডেনের ক্ষমতারোহনের পর এটা ফরাসি প্রেসিডেন্টের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাখোঁর এটা যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় সরকারি সফর। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি সরকারি সফরে ওয়াশিংটন এসেছিলেন।

বাইডেন ও মাখোঁ দুজনই যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যে ঐতিহাসিক ও দৃঢ় বন্ধুত্ব তুলে ধরতে জোর চেষ্টা চালালেও সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া থেকে গ্যাস রপ্তানি কমে যাওয়ায় ইউরোপের দেশগুলো কঠিন সংকটে পড়েছে। যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইউরোপ বেশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

জো বাইডেন তার মূল্যস্ফীতি হ্রাস আইনের (ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট-আইআরএ) আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে ৪০ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এতে করে মার্কিন কোম্পানিগুলো বাড়তি কর রেয়াত ও ভর্তুকি পাবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। বাইডেনের এ আইনের সমালোচকদের মধ্যে ফ্রান্স সবচেয়ে সরব।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, এ আইন ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে চরম আগ্রাসী পদক্ষেপ। এতে করে পশ্চিমা দেশগুলোর ঐক্য ঝুঁকিতে পড়বে। জবাবে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈনি ইলেকট্রিক কার, ব্যাটারি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সামগ্রীর জন্য যে ভর্তুকি দিয়েছেন, সেজন্য তার আফসোস নেই। তবে ইউরোপের গোস্বা কমাতে তিনি নতুন আইনে কিছু ছাড় দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।