মাঝরাতেও নিরাপদ কাতার, 'অস্বস্তিকর কিছু নেই'
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এবারের ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ কাতারে। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি ও বিতর্কের শেষ ছিল না। বিশেষ করে টুর্নামেন্ট শুরুর কিছু আগে যখন স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন খোলা জায়গা অ্যালকোহল বিক্রি এবং এলজিবিটি-সমর্থক যে কোনো কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়, তখন বিতর্ক তুঙ্গে উঠে। তবে যতই দিন গড়াচ্ছে, মনে হচ্ছে বেশ সফলভাবেই টুর্নামেন্ট সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী ভক্ত-সমর্থক-দর্শকদের নিরাপত্তার বিষয়টি আলাদা করে দৃষ্টি কেড়েছে সবার। খবর রয়টার্স।
রাতে একাকি কাতারের রাস্তায় হাঁটছেন এলি মোলোসন
ইংল্যান্ড থেকে আসা এলি মোলোসন বলেন, আমি কাতারে এসেছিলাম খুব ভয়ে ভয়ে। আমি মনে করেছিলাম, এটা নারীদের জন্য খুবই বিপজ্জনক একটি জায়গা হবে। আমি ভাবতেই পারিনি, এখানে এতটা নিরাপদে থাকব। একজন নারী সাপোর্টার হিসেবে আমি বলতে পারি, এখানে আমি খুবই নিরাপদ বোধ করছি।
তিনি জানান, কাতার আসার আগে তার বাবা তার নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন, তার এসব উদ্বেগ ছিল ভিত্তিহীন।
স্টেডিয়ামে নারী সমর্থকদের উল্লাস
তিনি আরও বলেন, অ্যালকোহলের ব্যাপারটি যদিও অনেকের কাছে সংস্কৃতিগত একটি বিষয়, তবে এটা ঠিক যে, অ্যালকোহলের নিয়ন্ত্রণ বিশ্বকাপের ভেন্যুসহ আশপাশের অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকিয়ে দিয়েছে। আমি মনে করি, যৌন হয়রানিসহ আরও নানা ধরনের অপকর্মে অ্যালকোহলের অনেক বড় একটি প্রভাব থাকে।
এলি মোলোসন বলেন, আমি অনেক আড্ডাবাজি পছন্দ করি। এখানে হয়তো আপনি সেটা পাবেন না। কারণ এখানকার সংস্কৃতি পরিবেশ অনেকটাই ভিন্ন। কিন্তু একই সাথে এটি অনেক বেশি আনন্দদায়ক, অনেক বেশি পরিবারবান্ধব।
২১ বছর বয়সী আর্জেন্টিনার ফ্যান আরিয়ানা গোল্ড বলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণের আগে বেশ নার্ভাস ছিলেন। কারণ কাতারের মতো দেশে তিনি কী আশা করতে পারেন, তা-ই তিনি জানতেন না। তিনি মনে করতেন, কাতার শুধু পুরুষদের এলাকা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, নারীদের জন্য মোটেও অস্বস্তিকর কিছু নয়।
অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে ইংল্যান্ডের সাপোর্টার এমা স্মিথ বলেন, যদিও কাতারে যেখানে সেখানে অ্যালকোহল নেই, কিন্তু এটি একটি বেশ ভালো পরিবেশ আছে এবং সব কিছুই বেশ ভালো চলছে। ফলে এখন সবাই সন্তুষ্ট। কাতারে কি তিনি নিরাপদ বোধ করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই, কারণ এতে কোনো অ্যালকোহল জড়িত নেই, এটি সত্যিই নিরাপদ একটি জায়গায়।
নিউ ইয়র্ক থেকে আসা আন্দ্রিয়া বলেন, পশ্চিমা মিডিয়ার মাধ্যমে এতদিন মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে যা জেনেছি, এখানে এসে তার চেয়ে ভিন্ন কিছুর অভিজ্ঞতা হলো আমার। মাঝরাতেও নির্বিঘ্নে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। এ পর্যন্ত কোনো সমস্যার মুখে পড়িনি।
তিনি আরও জানান, কখনো কখনো স্টেডিয়াম থেকে বের হতে হতে মাঝরাত হয়ে যায়। আবার দোহার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দাতেও খেলা দেখানো হচ্ছে। এসব জায়গাতেও প্রচুর নারী খেলা উপভোগ করছেন। বিপুলসংখ্যক নারী খেলা দেখেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কথা শোনা যায়নি।
কলম্বিয়া থেকে আসা ব্রাজিলভক্ত তাতিয়ানা লোপেজও কাতারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, যদিও সব জায়গায় পুরুষের আনাগোনা বেশি। কিন্তু আমরা সব জায়গায় সৌজন্যমূলক আচরণই পাচ্ছি।
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর