কেনিয়ায় পাকিস্তানি সাংবাদিককে হত্যা ‘পরিকল্পিত’

কেনিয়ায় পাকিস্তানের অনুসন্ধানী সাংবাদিক আরশাদ শরীফ হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি তদন্তকারীদের একটি দল। ৭ ডিসেম্বর, বুধবার তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

পাকিস্তানের অনুসন্ধানী সাংবাদিক আরশাদ শরীফ

৫৯২ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীফ হত্যাকাণ্ডের পর কেনিয়ার পুলিশ পরস্পরবিরোধী বিবৃতি দিয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে দুই পাকিস্তানি কর্মকর্তা কেনিয়ায় গিয়েছিলেন। তারা নিহত সাংবাদিক যে বাড়িতে ছিলেন সেটির মালিক, ভাই খুররাম এবং ওয়াকার আহমেদের সাথে দেখা করেছিলেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, খুররম তদন্তকারীদের বলেছিলেন যে শুটিংয়ের সময় তিনি শরীফের সাথে গাড়িতে ছিলেন। রাতের খাবারের পরে তারা বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা রাস্তায় রোডব্লক দেখতে পান। খুররম মনে করেছিলেন, এটি হয়তো ডাকাতরা স্থাপন করেছে। তারা দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান। এরপর তিনি তার আরেক ভাইকে ফোন করেন। সেই ভাইয়ের পরামর্শে গাড়ি না থামিয়ে সরাসরি কয়েক কিলোমিটার দূরে পরিবারের ফার্মহাউসে চলে যান। বাড়িতে পৌঁছানোর পর দুই ভাই দেখতে পান যে শরীফ ইতোমধ্যেই মারা গেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শরীফকে হত্যায় কেনিয়ার পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে। অবশ্য প্রতিবেদনে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেওয়া হয়নি এবং কেনিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কেনিয়ার পুলিশ এটিকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে। তবে কারা এজন্য দায়ী সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ না করে তারা জানিয়েছে কেনিয়া, দুবাই বা পাকিস্তানের কারও এই হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা থাকতে পারে।

গত আগস্টে পাকিস্তান ছাড়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন আরশাদ শরীফ। পরবর্তীতে তিনি কেনিয়ায় চলে যান। সদ্য প্রকাশিত এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীফকে গাড়ির ভেতর থেকে বা খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সমালোচক আরশাদ শরীফ ২৩ অক্টোবর কেনিয়ায় নিহত হন। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উপকণ্ঠে পুলিশ তার গাড়িতে গুলি করলে তিনি মারা যান। নাইরোবি পুলিশ পরে এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ভুল করে শরীফকে শিশু অপহরণকারী মনে করে গুলি করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে অনেকেই ধারণা করেন।

সূত্র: আল জাজিরা