সাত মাস পর 'ঘুম ভাঙল' পাকিস্তানি স্পিকারের

পাকিস্তানের পিটিআই-দলীয় এমপিদের পদত্যাগের সাত মাস পর বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সে দেশের জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ। পিটিআই এমপিরা চাপের মুখে পদত্যাগ করেননি এমন প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কারও পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন জোটের শরিক পিপিপির এই নেতা। খবর ডন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ

গত ১০ এপ্রিল পিএমএল-এন, পিপিপি ও জেইউআই দলীয় এমপিদের আনা অনাস্থা ভোটে পরাস্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। ওইদিনই তার দলের ১২৩ জন এমপি একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে যান। সে সময় জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ও পিটিআই নেতা কাসিম সুরী ভারপ্রাপ্ত স্পিকার হিসেবে পিটিআই এমপিদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।

জাতীয় পরিষদ থেকে পদত্যাগের পর পিটিআই নেতারা সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এরইমধ্যে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব নেন রাজা পারভেজ। এভাবে সাত মাসেরও বেশি সময় পেরোনোর পর পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদ থেকেও দলীয় এমএলএদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায় পিটিআই এমপিদের পদত্যাগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুললেন রাজা পারভেজ।

আজ রোববার সকালে লাহোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাজা পারভেজ বলেন, আইনে বলা আছে কোনো এমপি আমার সামনে এসে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও যদি আমার কাছে তথ্য আসে যে তিনি চাপের মুখে পদত্যাগ করছেন, তাহলে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না। গণহারে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরও পিটিআই এমপিরা সরকারি বাসভবনে থাকছেন ও বিভিন্ন সুবিধাদি নিচ্ছেন। এমনকি কয়েকজন আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন যাতে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করি।

এর আগে ২৭ জুলাই রাজা পারভেজ পদত্যাগী এমপিদের মধ্যে ১১ জনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। স্পিকারের এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে একটি পিটিশন রুজু করে পিটিআই। গত ৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ওই পিটিশন খারিজ করে এবং কাসিম সুরী কর্তৃক এমপিদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দেয়।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাজা পারভেজ বলেন, এমপিদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বলে সংবাদমাধ্যমে অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, আমি শুধু তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি। আমি আশা করছি সরকার পতনের আন্দোলনে না গিয়ে পিটিআই এমপিরা পার্লামেন্টে ফিরবেন। সরকার যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিরোধীদলও সমান গুরুত্বপূর্ণ।