শেষবারের মতো নির্বাচনে নামবেন এরদোয়ান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে এটিই হবে তার শেষ নিবাচনে অংশগ্রহণ। খবর আনাদোলু।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

কৃষ্ণ সাগর বন্দরে আয়োজিত এক সমাবেশে এরদোয়ান সমর্থকদের বলেন, ইনশাআল্লাহ, ২০২৩ সালের নির্বাচনের জন্য আমি শেষবারের মতো আপনাদের কাছে সমর্থন চাইছি। আপনাদের সমর্থন পেলে আমরা তুর্কি শতাব্দীর নির্মাণ শুরু করব এবং আমাদের তরুণদের কাছে এই আশীর্বাদপূর্ণ পতাকা হস্তান্তর করব।

এরদোয়ান এবং তার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) আগামী বছরের পার্লামেন্টারি এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাইছে। এর আগে এরদোয়ান প্রায় ২০ বছর ধরে দেশ শাসন করছেন। ২০০৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী এবং ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

একে পার্টি

২০১৭ সালে তুরস্কের রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী প্রেসিডেন্সি সিস্টেম চালু করে এবং প্রধানমন্ত্রীর পদটি বাতিল করে একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এর মধ্য দিয়ে এরদোয়ান ২০১৮ সালে নতুন ভূমিকা পালনের ম্যান্ডেট পান। সংবিধান অনুযায়ী, তিনি এই পদের জন্য দুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি পান।

ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং তুর্কি লিরার দরপতনের কারণে তুরস্কের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ সমস্যার মুখে পড়েছে। তারপরও এরদোয়ান সুদের হার বাড়াতে রাজি হননি। তিনি বিশ্বাস করেন, সুদের হার বাড়ালে তা মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়। তার এ ধারণা প্রচলিত অর্থনৈতিক চিন্তাধারার ঠিক বিপরীত হলেও তিনি এতে অনঢ় রয়েছেন।

এরদোয়ান বলেন, আমরা এমন একটি পরিষেবা পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছি যার ফলে উন্নত দেশগুলোও এখন তুরস্ককে ঈর্ষা করে। এখন তারা স্বীকার করছে, তুরস্ক সত্যিই একটি অন্যরকম দেশ। এমনকি প্রতিটি বৈশ্বিক সংকট আমাদের দেশের শক্তি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার জন্য সহায়ক হচ্ছে।

এরদোয়ান এ সময় বলেন, যারা এত বছর ধরে দেশ শাসন করছেন, তার অবশ্যই ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তবে পুরানো তুরস্কের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কোনো জবাবদিহি ছিল না। তবে আমরা নিজেরাই জবাবদিহি করি জনগণের কাছে, কোনো ধরনের চাপ ছাড়াই।

এদিকে নির্বাচনের আগে তার দেশের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা কমাতে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ক্রমশ স্বাভাবিক করার দিকে ঝুঁকছেন। ইসরায়েল তুরস্কের দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক মিত্র হলেও ২০১০ সালে শুরু হওয়া সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সে সময় এরদোয়ান ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ করার অভিযোগে তেলআবিবকে অভিযুক্ত করেন।

২০১৮ সালে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের পর বিষয়টি ঘিরে গাজা দাঙ্গায় কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এরদোয়ান বিষয়টিকে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও গণহত্যা বলে অভিযুক্ত করেন। এর প্রেক্ষিতে উভয় দেশ ২০১৮ সালে নিজ নিজ রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে। এখন আবার দেশ দুটি নিজ নিজ রাষ্ট্রদূতকে নিয়োগ দিয়েছে।