মেসি-এমবাপ্পে-জিরার্ডের অন্য লড়াই

গত বিশ্বকাপে চার গোল করেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবার তার গোল সংখ্যা একটি বেশি। পাঁচ গেfল করা ফরাসি সেনসেশনই এবারের আসরে গোল্ডেন বুট জয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন। কিন্তু সবশেষ ম্যাচে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল পাননি এমবাপ্পে। তবে জালের নাগাল পেয়েছেন অভিভার জিরার্ড। চার গোল করেছেন তিনি।

গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে মেসি, এমবাপ্পে ও জিরার্ড

অথচ গত বিশ্বকাপে সাত ম্যাচ খেলে একটিও গোল পাননি ফরাসি স্ট্রাইকার। ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতলেও জিরার্ডকে নিয়ে প্রচুর ট্রল হয়েছে। ফ্রান্সের এবারের বিশ্বকাপে দলে তার জায়গা পাওয়া নিয়েও তো সংশয় ছিল। শেষ পর্যন্ত তার ওপর আস্থা রেখেছেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশাম। গুরুর আস্থার প্রতিদান দিয়েই চলছেন জিরার্ড। সতীর্থ স্ট্রাইকার ও দলের সবচেয়ে বড় তারকা করিম বেনজেমার অভাবটা বুঝতেই দিচ্ছেন না তিনি। শেষ আটের ম্যাচে এমবাপ্পে নিষ্প্রভ থাকলেও তিনি জ্বলে উঠেছেন।

ব্যক্তিগত পুরস্কার গেল্ডেন বুট পাওয়ার লড়াইয়ে ভালোভাবেই আছেন দুই ফরাসি ফরওয়ার্ড। তাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছেন লিওনেল মেসি। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে চলেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। নিজে গোল করছেন এবং সতীর্থদের দিয়েও করিয়েছেন। গোল্ডেন বল পাওয়ার দৌড়ে কার্যত তিনিই সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। কিন্তু গোল্ডেন বুট জয়ের লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছেন তিনি।

শেষ ষোলোর রাউন্ড পর্যন্ত তার গোল ছিল তিনটা। এমবাপ্পে এই পর্বে গোল না পাওয়ার সুযোগটা তিনি কাজে লাগিয়েছেন। ব্যবধান আরও কমিয়ে এনেছেন মেসি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি করেন এবারের বিশ্বকাপের চতুর্থ গোল। চলে আসেন গোল্ডেন বুট পাওয়ার লড়াইয়ে। আসরে এখন আর দুটি করে ম্যাচ পাবেন এই তিন ফুটবলার। তা ম্যাচের ফল যা-ই হোক না কেন।

সেমিফাইনালে হারলেও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ খেলার সুযোগ আসবে। এই দুটি ম্যাচেই নির্ধারণ হয়ে যাবে গোল্ডেন বুটের ভাগ্য। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের এই মুকুটটি জিতেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন। এবার অবশ্য পুরোদস্তুর স্ট্রাইকারের ভূমিকায় খেলেননি ইংলিশ স্ট্রাইকার। প্লে-মেকার হিসেবে খেলতে দেখা গেছে তাকে। সতীর্থদের গোল করানোই ছিল তার মূল দায়িত্ব। যেটি কেন করেছেন। পাশাপাশি নিজেও দুটি গোল করেছেন। দুটোই অবশ্য পেনাল্টি থেকে!

গোল্ডের বুটের লড়াইটা এখন মূলত ত্রিমুখী। এমবাপ্পে, মেসি ও জিরার্ডের লড়াই। কারণ চারটি গোল নেই আর কারোরই। তিনটি করে গোল আছে সাতজন ফুটবলারের। তারা হলেন- রিচার্লিসন, ইনার ভ্যালেন্সিয়া, মার্কাশ রাশফোর্ড, বুকায়ো সাকা, কোডি গাকপো, গনসালো রামোস ও আলভারো মোরাতার। এদের মধ্যে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলেছেন রামোস। দুই ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন পর্তুগিজ তরুণ ফরওয়ার্ড। যা এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ও একমাত্র হ্যাটট্রিক। ২১ জন ফুটবলার দুটি করে গোল করেছেন। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টের ২২তম আসরে ৬০ ম্যাচে ১৫৮টি গোল হয়েছে। যার ১৫৬টিই প্রতিপক্ষ ফুটবলারের। দুটি গোল আত্মঘাতী হয়েছে। নিজেদের জালে বল জড়িয়েছেন আর্জেন্টিনার এনজো ফার্নান্দেজ এবং মরক্কোর নায়েফ অ্যাগুয়ের্ড গোল ঠেকাতে গিয়ে নিজেই বল পাঠিয়ে দেন নিজেদের জালে!

গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে তারা তিনজন:

কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স): ৫ ম্যাচে ৫ গোল
লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা): ৫ ম্যাচে ৪ গোল
অলিভার জিরার্ড (ফ্রান্স): ৫ ম্যাচে ৪ গোল