পাকিস্তান: সন্ত্রাসবাদকে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে ভারত

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার বলেছেন, সন্ত্রাসবাদকে ভারতের চেয়ে কোনো দেশ বেশি কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। ভারতের উদ্দেশ্যই ছিল সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে পাকিস্তানের শান্তি ও নিরাপত্তা নষ্ট করা। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। খবর ডন নিউজ।

হিনা রব্বানি খার

এর আগের দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ দাবি করেছিলেন, গত বছর লাহোরে যে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল, তাতে ভারতের হাত ছিল। ওই ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়।

হিনা রব্বানি খার বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি শিকারের ভূমিকা পালন করে ভারতের চেয়ে কোনও দেশ বেশি লাভবান হয়নি। ভারত নিজেকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী একটি চ্যাম্পিয়ন রাষ্ট্র হিসেবে চিত্রিত করছে, যদিও তারা এই ইস্যুতে কোনও অবদান রাখেনি। তারা কেবল বাগাড়ম্বর করে যায়।

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক

হিনা রব্বানি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সন্ত্রাসবাদ শান্তির জন্য একটি গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তান দীর্ঘকাল ধরে এই দুর্যোগের শেষ প্রান্তে ছিল। আমি আপনাদের জানাতে চাই, কীভাবে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) উন্নতি করছে, কীভাবে আঞ্চলিক সংযোগ ঘটছে। আমরা এমন এক জায়গায় আছি যেখানে সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত অপরাধীরা নিজেদেরকে সবচেয়ে বড় শিকার হিসেবে তুলে ধরছে। তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) সভাপতি হিসেবে কাল্পনিক উৎস থেকে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ঢোল পিটাচ্ছে। অন্যদিকে আমরা কোনো ধরনের ভণ্ডামির আশ্রয় নিতে ইচ্ছুক নই।

তিনি বলেন, আমরা কোদালকে কোদালই বলতে চাই। আমরা এর দ্বারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই এবং প্রমাণসহ জিনিসগুলো দেখতে তাদের আহ্বান জানাই।

গত বছরের হামলার কথা উল্লেখ করে হিনা বলেন, ওই হামলার সাথে যে ভারত জড়িত আছে সে ব্যাপারে আমাদের কাছে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের মতো ঘটনার পরের দিনই গিয়ে অন্য দেশকে দোষারোপ করি না। আমাদের হাতে শক্ত প্রমাণ না আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করেছি।

২০২১ সালের জুনে, জোহর টাউনে জামাতুদ দাওয়া প্রধান হাফিজ সাইদের বাসভবনের কাছে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে তিনজন নিহত এবং একজন পুলিশ কনস্টেবলসহ ২৪ জন আহত হয়েছিল। এতে আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে ঘটনার কয়েকদিন পর, তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. মুইদ ইউসুফ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, হামলার মূল পরিকল্পনাকারী একজন ভারতীয় নাগরিক এবং তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত। এই বছরের শুরুর দিকে, বেলুচিস্তান থেকে জোহর টাউন বোমা বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড এবং সহায়তাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লাহোর বিস্ফোরণের বিষয়ে হিনা বলেন, ওই হামলাটি ভারতের পরিকল্পিত ও সমর্থিত হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তিনি দাবি করেন,
হামলার সাথে সম্পৃক্ত কিছু অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু মূল মাস্টারমাইন্ড ও সহায়তাকারীরা অনেক বড় এবং তারা ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও সুরক্ষার অধীনে নিরাপদে রয়ে গেছে।

হিনা রাব্বানী বলেন, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতিত্ব করার সময় ভারত খুব উচ্চস্বরে আওয়াজ তুলেছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে তারাই অভিযুক্ত হচ্ছে।