বিষাক্ত অ্যালকোহলে প্রাণ গেল ৩৯ জনের

ভারতের বিহার রাজ্যের নীতিশ কুমার সরকার মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ২০১৬ সালে। তারপরও বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে মদপান ও মদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে তারপরও সেখানে এসব কাণ্ড থেমে নেই তা গতকালের ঘটনায় আবারও পরিষ্কার হয়ে গেছে। বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করে অন্তত ৩৯ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। খবর এএনআইনিউজ।

মৃতদের স্বজনদের আহাজারি

বিহারের পূর্বাঞ্চলের দুটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মদ বিক্রি ও সেবন পুরোপুরি নিষিদ্ধ। বিহারের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,
ক্রমশই হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে। অসুস্থ হিসেবে যাদের ভর্তি করা হয়েছে, তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা ও নিম্নকক্ষ লোকসভায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ে এর জন্য একে অপরকে দায়ী করতে থাকে। মদপান উচিত নয় মন্তব্য করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মদপান করে তাহলে কী হতে পারে, তার উদাহরণ এখন আমাদের সামনে। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে কোনো দরিদ্র্য ব্যক্তিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার না করা হয়। বরং যারা এসব বিষাক্ত মদ তৈরি করেছে, তাদেরই যেন ধরা হয়।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার

কর্তৃপক্ষ জানায়, মদ খেয়ে গত মঙ্গলবার বমি করতে শুরু করে ওই এলাকার পুরুষরা। এর পর থেকে তাদের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পথেই তিনজনের মৃত্যু হয়। অন্যরা বুধ ও বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে মাদকের ওপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকলেও গোপনে অনেক স্থানেই সস্তা মদ তৈরি হয়। পরে সেগুলো তারা কালোবাজারে বিক্রি করেন। এসব জায়গা থেকে সস্তা দামের অ্যালকোহল পান করে প্রতি বছর কয়েকশ ভারতীয় মারা যায়।

বিহারের একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার সন্তোষ কুমার বলেন, আমরা এক ডজনেরও বেশি মদ ব্যবসায়ী ও মদসেবনকারীকে গ্রেপ্তার করেছি।

ইন্টারন্যাশনাল স্পিরিটস অ্যান্ড ওয়াইন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সমীক্ষা অনুসারে, দেশটিতে প্রতি বছর আনুমানিক ৫০০ কোটি লিটার অ্যালকোহল পান করা হয়, যার প্রায় ৪০ শতাংশই উৎপাদিত হয় অবৈধভাবে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়, অবৈধ মদের ক্ষমতা বাড়াতে প্রায়ই এর মধ্যে মিথানল যুক্ত করা হয়। এর ফলে মদপানকারীর অন্ধত্ব, লিভারের ক্ষতি দেখা দিতে পারে, এমনকি সেটি তার মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

গত জুলাইয়ে, পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে বিষাক্ত মদ পানে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর গত বছর উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাব রাজ্যে একই ধরনের ঘটনায় প্রায় ১০০ জন মারা গিয়েছিল।