কিশিদার কঠোর প্রতিরক্ষা নীতিতে বিভক্ত জাপান

সম্প্রতি কঠোর প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। এ উপলক্ষে প্রকল্প তৈরি ও তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার। তার এই সিদ্ধান্তে দেশটির নীতি নির্ধারকদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, জাপানের শান্তিবাদী সংবিধান লঙ্ঘন করা ঠিক হবে না। আবার কিশিদাপন্থীরা কঠোর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের পরেই অবস্থান নিতে চান। দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের খবর।

জাপানের সেনাবাহিনী

প্রধানমন্ত্রী কিশিদা গতকাল শুক্রবার জাপানের নিরাপত্তা নীতি পরিবর্তনের ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে জাপানের যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, তা যেকোনো হামলা ঠেকাতে অক্ষম। তাছাড়া বিশ্ব পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে তাতে জাপান চুপ থাকতে পারে না। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রায়ই জাপান সীমানায় আঘাত হানছে। এসব হামলা ঠেকানো কিংবা পাল্টা জবাব দিতে কঠোর প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণই সমাধান।

২০২৭ অর্থবছরের মধ্যে বর্তমান বাজেটের ভিত্তিতে জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক ব্যয়কারী দেশে পরিণত হবে। দেশটির হাতে ফিরবে কাউন্টার স্ট্রাইক (পাল্টা হামলা) ক্ষমতা। সক্রিয় হয়ে উঠবে টোকিওর সাইবার ডিফেন্স।

খবরে বলা হচ্ছে, জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পেছনে গণমাধ্যম বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। সানকেই শিম্বুনের মতো রক্ষণশীল সংবাদপত্র জাপানের প্রতিবেশী চীন, উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়াকে 'অত্যাচারী' হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সাইকেই-এর অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছে অপর পত্রিকা ইয়োমিউরি শিম্বুন।

তবে উদারপন্থী সংবাদপত্র আশাহি শিম্বুনের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, শান্তিবাদী নীতি কার্যকরভাবে বাতিল করা হয়েছে। যেকোনো অনিয়ন্ত্রিত সামরিক উন্নয়ন দেশের জন্য হঠাৎ নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, ধীরে ধীরে হলেও এক সময় ঠিকই জাপানকে কঠোর প্রতিরক্ষার দিকেই যেতে হতো। প্রতিরক্ষা মজবুত না হলে পরাশক্তি কোনো দেশ হামলা করলে জাপান কী জবাব দেবে।

ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. তোশ মিনোহারা দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, হঠাৎ শান্তিবাদী নীতি ভেঙে কঠোর প্রতিরক্ষা নীতি আপাত দৃষ্টিতে জাপানের জাতীয় নীতির বিপরীত। মূল ব্যাপার হলো জাপানের প্রতিরক্ষা পরিচয় নতুন করে গড়তে চাচ্ছে সরকার। কিন্তু জনগণকে না বোঝাতে পারলে পরিস্থিতি কঠিন হতে পারে।