ঝড়ে ডুবে গেছে যুদ্ধজাহাজ, নিখোঁজ ২১ নাবিক

বৈরী আবহাওয়ার কারণে রাজকীয় থাই নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ডুবে গেছে। স্থানীয় সময় রোববার মধ্যরাতের পর সিয়াম উপসাগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ডুবে যাওয়া যুদ্ধজাহাজের ১৯৬ নাবিকের মধ্যে ২১ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে।

সিয়াম উপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে সুখোথাই করভেট স্টারবোর্ড সাইডে হেলে পড়ে

থাই নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ২৫২-ফুট দীর্ঘ করভেট এইচটিএমএস সুখোথাই একদিকে হেলে পড়ে। এতে জাহাজের এক্সহস্ট পাইপে পানি ঢুকে একপর্যায়ে ইলেকট্রিক সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। ইলেকট্রিক্যাল শাটডাউনের কারণে জাহাজটির মূল পাওয়ার সিস্টেম বিকল হয়ে যায়। এতে করে নাবিকরা জাহাজের গলুইয়ে ঢুকে পড়া পানি পাম্প করতে পারছিলেন না।

বিবৃতিতে বলা হয়, সুখোথাই করভেট থেকে বার্তা পেয়ে নৌবাহিনীর আরও কয়েকটি জাহাজ ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তী তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অন্যান্য নৌযান থেকে সুখোথাই করভেটে পাম্প স্থানান্তরের চেষ্টা চালানো হয়। সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সোমবার দিনের প্রথম প্রহরে সুখোথাই আরও কিছুটা হেলে পড়ে। একপর্যায়ে পুরোপুরি ডুবে যায়।

কর্মকর্তারা জানান, প্রাশুপ খিরি খান উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে সিয়াম উপসাগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সোমবার সকাল পর্যন্ত চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নিখোঁজ নাবিকদের উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়। ডুবে যাওয়া নৌযানের ১০৬ নাবিকের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২১ জন নিখোঁজ। একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। ৮৪ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

৯৬০ টন ওজনের করভেট সুখোথাই যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। গান, মিসাইল ও টর্পেডো সংযুক্ত এ করভেট ১৯৮৭ সালে থাই নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। যুদ্ধজাহাজটি পুরোনো হওয়ায় নাবিকরা বৈরী পরিবেশে সুবিধা করতে পারেননি বলে মতপ্রকাশ করেছেন মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন কার্ল শুস্টার।

সিএনএনকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় কার্ল বলেন, যুদ্ধজাহাজের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা একবার বিকল হয়ে গেলে আপনি পুরোপুরি অন্ধকারে। এ অবস্থায় পোর্টেবল ডিজেল পাম্প ও বালতি দিয়েই আপনাকে পানি অপসারণ করতে হবে। গভীর সমুদ্রে একটি তুলনামূলক ছোট, প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো জাহাজের এ অবস্থায় টিকে থাকা প্রায় অসাধ্য।

থাই নৌবাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে বড় ধরনের এসএআর (অনুসন্ধান ও উদ্ধার) অভিযান চলছে। জীবিতদের খুঁজে পেতে নৌবাহিনীর সামরিক নৌযান, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকটি বেসামরিক নৌযান ও ট্যাঙ্কার অভিযানে অংশ নিচ্ছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত উদ্ধারকৃত ৭৫ জনের মধ্যে নৌবাহিনীর জাহাজ এইচটিএমএস ক্রাবুরি ৪৭ জনকে, মোটর ট্যাঙ্কার শ্রী ছাইয়া ২০ জনকে, টাগবোট ৪ জনকে, মোটর ট্যাঙ্কার স্ট্রেইটস এনার্জি ২ জনকে ও তেলবাহী ট্যাঙ্কার ২ জনকে উদ্ধার করে।