পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে জয় পেলেন আনোয়ার ইব্রাহিম

মালয়েশিয়ার রাজা কর্তৃক প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর গতকাল সোমবার আস্থা ভোট জিতেছেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি উত্থাপনের পর দুই ঘণ্টা ধরে চলে তর্ক-বিতর্ক, পরে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। খবর আলজাজিরা।

আনোয়ার ইব্রাহিম, ফাইল ছবি

পার্লামেন্টের ২২২ আসনের নিম্নকক্ষে গতকাল বিশেষ অধিবেশনে আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। উপপ্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ফাদিল্লাহ ইউসুফ প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীপক্ষের ১২ জন সদস্য প্রস্তাবটি নিয়ে বিতর্কে অংশ নেন। তবে শেষ পর্যন্ত আইনপ্রণেতাদের কণ্ঠভোটে উতরে যান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এ সময় জোটসদস্যরাও তাকে সমর্থন দেন।

কয়েক বছর ধরেই অচলাবস্থা চলছিল মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে। সেটি কাটিয়ে উঠতে ১৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় ১৫তম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির ২২২ আসনের পার্লামেন্টে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হয় ১১২টি আসন। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মূল দুই জোটের কেউ প্রয়োজনীয় আসন পায়নি।

পার্লামেন্টে আনোয়ার ইব্রাহিম

নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান জোট পায় সর্বোচ্চ ৮২টি আসন পায়। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দল পেরিকাতান ন্যাসিওনাল পায় ৭৩টি আসন। বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোট বারিসান ন্যাসিওনাল জয় পায় ৩০টি আসনে। ফলে তারাই হয়ে ওঠে কিং মেকার। কিন্তু তারা কোনো জোটকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে আবারও দেখা দেয় অচলাবস্থার শঙ্কা।

এ জটিল পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন মালয়েশিয়ার সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ। রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। সেখানেই সবার সাথে পরামর্শ করে ৭৫ বছর বয়সী আনোয়ার ইব্রাহিমকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন। ফলে দীর্ঘ দিন সংগ্রামের পর দেশটির দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হন আনোয়ারি ইব্রাহিম। তিনি গত শুক্রবার তার ২৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আহমদ জাহিদ হামিদি ও ফাদিল্লাহ ইউসুফকে মনোনীত করেন।

ওই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে জয় পেয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। এর ফলে আপাতত তার রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকে ধারণা করছেন, ২০০৮ সালের পর মালয়েশিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তিনি। কারণ সরকার গঠনের সময় করা চুক্তির কারণ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল পার্লামেন্টে আনোয়ার ইব্রাহিম সরকারের উত্থাপিত বিল পাসের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করা থেকে বিরত থাকবে। ওই চুক্তিতে বলা হয়, পার্লামেন্টের যে কোনো সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে গণ্য হবেন।

গতকালের ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারও। উভয় পদে আনোয়ার ইব্রাহিমের মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সাবেক চিফ হুইপ জোহারি আবদুল স্পিকার এবং মাদাম অ্যালিস লেউ ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন।