মিয়ানমার: চলতি বছর জান্তা সেনাদের হাতে ১৬৫ শিশু নিহত

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর হাতে বিদায়ী বছরে ১৬৫ শিশু নিহত হয়েছে। জান্তাবিরোধী নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) এ কথা জানিয়েছে। বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহীদের টার্গেট করে স্কুল-হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনায় জান্তার বিমান হামলার কারণেই এতো বেশি শিশু নিহত হয়েছে। খবর গার্ডিয়ান।

মিয়ানমারের কাচিনে জান্তার বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি বেসামরিক স্থাপনা

মিয়ানমারে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির এনএলডি সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় সুচিসহ এনএলডি সরকারের বেশির ভাগ এমপি-মন্ত্রীকে।

সামরিক জান্তা সরকারের ক্ষমতা দখলের একদিনের মাথায় সুচিসহ গণতান্ত্রিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে শুরু থেকেই বিক্ষোভ দমনে হত্যা-গুলি, গ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে জান্তাবাহিনী।

জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি ২০২২ সালে জান্তা সেনাদের হাতে ১৬৫ শিশু নিহত হয়েছে। এই শিশু হত্যার সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেশি।

এনইউজির অভিযোগ, বিদায়ী বছরে জান্তাবাহিনী দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্রোহী-বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। বিমান থেকে গোলার আঘাতে বেশির ভাগ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সাগাইং অঞ্চলের তাবায়িন এলাকায় একটি স্কুলে গত শুক্রবারও হামলা চালায় জান্তাবাহিনী।

এনইউজির অভিযোগের বিষয়ে বেলজিয়ামভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) মিয়ানমারের কনসালটেন্ট থমাস কিয়ান বলেন, শিশুহত্যা নিয়ে মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকারের তথ্য বিশ্বাস না করার কোনো কারণ নেই।

এনইউজির নারী, যুব ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে থমাস কিয়ান বলেন, জান্তা সেনারা মিয়ানমারের বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের গোলার আঘাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। তাই জান্তার বিমান হামলা ও গোলার আঘাতে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে।

মিয়ানমারে রাজনৈতিক বন্দিদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা এসিস্ট্যান্স এসোসিয়েশন জানিয়েছে, জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৬০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।