জাতিসংঘে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ভোটাভুটি

কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অভিযান, গ্রেপ্তার, হত্যাযজ্ঞসহ নানা অপরাধ অব্যাহত রেখেছে দেশটি। ইসরায়েলের এই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের আইনি পরিণতি কী হতে পারে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইজিসে) মতামত জানতে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। খবর আল জাজিরা।

জাতিসংঘে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ভোটাভুটি

প্রস্তাবটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সমর্থনে পাস হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮৭টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দেয় ২৬টি দেশ। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ৫৩টি দেশ। রাশিয়া ও চীন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। অপরদিকে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত হলো হেগ-ভিত্তিক আইসিজে। এটি বিশ্ব আদালত নামেও পরিচিত। ভোটাভুটির পর ফিলিস্তিনি সিনিয়র কর্মকর্তা হুসেইন আল শেখ বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনি কূটনীতির বিজয়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেন, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার সময় এসেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়ন-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের হিসেব ইসরায়েলকে দিতে হবে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, প্রস্তাব এমন সময় আসল যখন ইসরায়েলে একটি চরম ডানপন্থী সরকার শপথগ্রহণ করেছে। এই ভোটাভুটি ইসরায়েলের ঔপনিবেশিক ও বর্ণবাদী নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে। যারা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

নতুন সরকার গঠনের আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, তার সরকার পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে চরম সমালোচিত হয় এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে ভোটাভুটির পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইসরায়েলের দখলবাজি, বসতি স্থাপন এবং ভূখণ্ড সংযুক্তিকরণের আইনি পরিণতির ব্যাপারে আইসিজের পরামর্শমূলক মতামত জানতে চেয়েছে। বিশেষ করে পবিত্র জেরুজালেম শহর দখলবাজি ও বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের আইনি প্রতিকার চাওয়া হয়েছে।

আগে এক বিবৃতিতে বলেন, ইহুদি জনগণ তাদের নিজ দেশে ‘দখলকারী’, এটা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থার যেকোনো সিদ্ধান্ত অবৈধ। জাতিসংঘ নৈতিকভাবে দেউলিয়া ও অতি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।