টোকিও ছাড়লেই প্রতি শিশুর জন্য পাবেন ১০ লাখ ইয়েন

বাংলাদেশের মতো গণহারে না হলেও কর্মসূত্রে জাপানের অনেক মানুষই রাজধানী টোকিওমুখী। এ কারণে টোকিওর জনসংখ্যা যেমন লাগামহীনভাবে বাড়ছে, তেমনি কমছে অন্যান্য অঞ্চলের জনসংখ্যা। এতে ধীরে ধীরে জনসংখ্যাগত ভারসাম্য হারাচ্ছে দেশটি। এ অবস্থায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে অভিনব এক পদক্ষেপ নিয়েছে জাপান সরকার। খবর গার্ডিয়ান।

টোকিওর লোকজন

টোকিওর জনসংখ্যা কমানোর অংশ হিসেবে রাজধানী ছাড়ার বিনিময়ে মাথাপিছু বিশাল অংকের অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সরকার। ওই প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, টোকিও ছাড়লেই প্রতিটি শিশুর জন্য তার পরিবার ১০ লাখ ইয়েন বা সাড়ে সাত হাজার ডলার (সাত লাখ ৮৮ হাজার টাকা) পাবে।

এর আগেও সরকারের পক্ষ থেকে এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সে সময় টোকিও ছাড়লে প্রতিটি শিশুর জন্য ৩ লাখ ইয়েন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সে অংকটি এবার বাড়িয়ে ১০ লাখ করা হয়েছে। সদ্য শুরু হওয়া বছরের এপ্রিল থেকে সরকারের এ কর্মসূচি চালু হবে।

টোকিও মেট্রোতে লোকজনের ভীড়

জাপানের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের এই সুবিধা পেতে হলে পরিবারগুলোকে রাজধানী ছাড়তে হবে। তবে কেউ যদি শহরের সীমানায় থাকা পাহাড়ি এলাকায় স্থানান্তরিত হয়, তাহলে সেও এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। জাপানি সরকার আশা করছে, এর ফলে তিন কোটি ৫০ লাখ বাসিন্দার শহর টোকিওতে জনসংখ্যার চাপ কমবে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রদেয় অর্থের পরিমাণ ৩০ লাখ ইয়েনও হতে পারে। তবে এর জন্য তাদেরকে তিনটি প্রস্তাবের একটিতে সম্মত হতে হবে। এগুলো হচ্ছে, স্থানান্তরিত নতুন এলাকাতে কমপক্ষে পাঁচ বছর স্থায়ী হওয়া, সেখানেই কোনো চাকরি বা ব্যবসা শুরু করা অথবা সেখান থেকেই আগের কর্মস্থলে নিজের পুরোনো কাজ (চাকরি বা ব্যবসা) চালিয়ে যাওয়া।

জাপানের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আশা করছে, নতুন এই স্কিমের অধীনে ২০২৭ সাল নাগাদ টোকিও থেকে ১০ হাজার পরিবার অন্যত্র সরে যাবে। ঘোষিত অর্থের অর্ধেক আসবে কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট থেকে। বাকিটুকু আসবে স্থানীয় পৌরসভা থেকে।

এদিকে রাজধানী টোকিওর জনসংখ্যা বাড়লেও কমছে জাপানের সামগ্রিক জনসংখ্যা। ২০২০-২১ সালে দেশটিতে ৬ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ কমেছে। ২০৬৫ সাল নাগাদ দেশটির জনসংখ্যা আরও ৩০ শতাংশ কমে যাবে।