হজ ফিরছে আগের রূপে, আগের সংখ্যায়

করোনা মহামারির বিভীষিকাময় সে অধ্যায় পেছনে ফেলে আবারও পুরোনো রূপে ফিরছে হজ অনুষ্ঠান। ফলে থাকছে না করোনার বিধিনিষেধ, সংখ্যার সীমিতকরণের কোনো ব্যবস্থা, উঠে যাবে বয়সের বিধি-নিষেধও। ২০২৩ সালের ২৬ জুন হজ মৌসুম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স ও হিন্দুস্তানটাইমস।

হজের সময় টইটম্বুর কাবা শরিফ, ফাইল ছবি

বর্তমানে সৌদি আরবে চলছে হজ ও ওমরাহ সম্মেলন এবং হজ এক্সপো ২০২৩। এ অনুষ্ঠান উদ্বোধনের সময় দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ জানান, আসন্ন হজ মৌসুমে কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই চলবে হজ কার্যক্রম। হজযাত্রীদের সংখ্যা প্রাক-মহামারির মতোই হবে। বয়সসীমাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করবে না সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় অবশ্য এর আগে বলেছিল, যারা আগে কখনো হজ করেনি, এই বছর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

সৌদি আরবে চলছে হজ এক্সপো

করোনাভাইরাস মহামারির আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে স্বাভাবিকভাবে হজ পালিত হয়। ২০২০ সালে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সৌদির মাত্র ১০ হাজার নাগরিক হজ পালন করেন। ২০২১ সালেও করোনার প্রভাব থাকায় বিদেশিদের হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা দেয় সৌদি সরকার। ওই বছর সৌদিতে থাকা ৬০ হাজার মানুষ হজ পালন করার সুযোগ পান।

তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে হজ পালনের জন্য সৌদি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তবে সেক্ষেত্রে কোটা অর্ধেক করে ফেলে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদি নাগরিক ছাড়া বিশ্বের ৯ লাখ মানুষ হজ পালন করেন।

এমনিতে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান হজ পালন করে থাকেন। করোনার প্রভাব এড়িয়ে তিন বছর পর এবার আগের মতো ২৫ লাখ মানুষ হজ পালন করতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

এদিকে সবকিছু যেমন আগের চেহারায় ফিরছে, তেমনি বাংলাদেশ থেকেও আগের সংখ্যাতেই মানুষ হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। আগের মতো পুরো কোটায় অর্থাৎ এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন আগামী জিলহজ্জ মাসে হজ পালন করতে পারবেন। গতকাল সোমবার এ বিষয়ে সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষে ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ চুক্তিতে সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী এবার সরকারিভাবে ১৫ হাজার এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে বাকি এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। হজ টিমের (প্রশাসনিক ও মেডিক্যাল) সদস্য হিসেবে এক হাজার ২৭০ জন সৌদি আরবে যেতে পারবেন।

চুক্তিতে আরও বলা হয়, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন এবার বাংলাদেশেই হবে। সবাইকে অবশ্যই কোভিড টিকা নিতে হবে। হজযাত্রীদের মধ্যে জেদ্দা দিয়ে ৭০ শতাংশ এবং মদিনা দিয়ে ৩০ শতাংশ হজযাত্রী আসা-যাওয়া করবেন।