মিয়ানমারে পালানোর চেষ্টারত ১১২ রোহিঙ্গাকে কারাদণ্ড

দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে মিয়ানমার জান্তাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে ১১২ রোহিঙ্গা। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনই শিশু। খবর আল জাজিরা।

মিয়ানমারের বন্দিদশা থেকে পালাতে সাগরে পাড়ি জমায় রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় আইয়ারবতীর বোগালে শহরের একটি আদালত তাদের এ সাজা দিয়েছে। আজ স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রোহিঙ্গাদের কারাদণ্ডের এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট।

পুলিশ জানিয়েছে, ডিসেম্বরে একটি যন্ত্রচালিত নৌকা থেকে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছে কোনো সরকারি নথিপত্র না থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাদের কারাদণ্ড দিয়ে  জেলে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ আরো জানায়, আদালতের রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১২ শিশুর মধ্যে সাতজনকে তিন বছর করে এবং পাঁচজনের বয়স আরও কম হওয়ায় তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব শিশুদের সোমবার একটি কিশোর প্রশিক্ষণ স্কুলে পাঠানো হয়েছে।

মিয়ানমারে ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা দেশটি ছেড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের যারা এখনো মিয়ানমারে রয়ে গেছেন, তাদের অনেকেই বন্দিশিবিরে জীবনযাপন করছেন। বন্দিশিবিরে রোহিঙ্গাদের চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে। এতে তারা কাজকর্ম, পড়াশোনা বা চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত।

ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের কোনো বন্দিশিবির থেকেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই রোহিঙ্গারা।

ডিসেম্বরের শেষের দিকে ১৮৫ জন রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা কয়েক সপ্তাহ সাগরে ভেসে থাকার পর পর ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে নোঙর করে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, সদ্য বিদায় নেওয়া ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় দেশত্যাগী রোহিঙ্গার সংখ্যা অন্তত ছয়গুণ বেড়ে গেছে। মিয়ানমারের বন্দি জীবন এড়াতেই মূলত তারা মৃত্যুকে তোয়াক্কা না করেই উন্নত জীবনের আশায় সাগরপথে পাড়ি জমাচ্ছে।