আজারবাইজান: ফ্রান্সকে ক্ষমা চাইতে হবে

২০২০ সালে আর্মেনিয়ার সাথে কারাবাখে যুদ্ধের সময় অপবাদ দেওয়ার জন্য ফ্রান্সকে ক্ষমা চাইতে বলেছে আজারবাইজান। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, সংঘাতের সময় ফ্রান্স আমাদের স্পষ্ট অপবাদ দিয়েছিল, আমাদের বিনা কারণে প্রমাণ ছাড়াই অভিযুক্ত করেছিল। এর জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ

তিনি বলেন, কারাবাখ-দক্ষিণ ককেশাস তুর্কি জাতির অঞ্চল। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু ফ্রান্স তা মানতে চায় না। ফ্রান্স মনে করে, এই অঞ্চলটিতে সংঘাত জিইয়ে থাকুক। ফ্রান্সের অবস্থান আজারবাইজানিদের বিরুদ্ধে। আমরা আর্মেনিয়ার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়ায় ফ্রান্সের মাথাব্যথার কারণ।

আজারবাইজানি প্রেসিডেন্ট বলেন, কারাবাখে ফ্রান্সের পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে গেছে। তারা আর্মেনিয়াকে বাঁচাতে পারেনি। ফরাসি সরকারের ওপর আর্মেনিয়ান প্রভাব বাকুর ওপর নাখোশের আরেকটি কারণ। যুদ্ধ শুরুর আগে ফ্রান্স নিরপেক্ষ থাকলেও যুদ্ধের সময় তাদের চরিত্র বদলে ফেলেছিল।

আজারবাইজান মনে করে, ফ্রান্স ছাড়াই আমরা চলতে পারি, আমাদের ছাড়া। তবে যদি দেশটি আমাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায় তাতে বাকুর কোনো আপত্তি থাকবে না।

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান দুটি সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র। ১৯৯১ সালে আর্মেনিয়া কারাবাখ দখল করলে দুদেশের মধ্যে বিরোধ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। বহু বছর ধরে কারাবাখের সাধারণ মানুষ তাদের জীবন, ভূমি ত্যাগ করে সীমান্তে পালিয়ে যায়। তাদের ছিলো অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।

তবে ২০২০ সালে সেই ভোগান্তির অবসান ঘটে। আজারবাইজান কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় আবারও। এটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত। একটি বড় ভূখন্ডের সাথে সাতটি ছোট ভূখন্ড নিয়ে অঞ্চলটি গঠিত। সর্বশেষ যুদ্ধে আর্মেনিয়া পরাজিত হয় এবং বেশ কয়েকটি শহর, গ্রাম ও বসতি মুক্ত হয়। রাশিয়ান ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় শান্তি ফিরে আসে।

আলিয়েভ বলেন, গত বছর ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এখন আজারবাইজানের তেল সম্পদের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আগ্রহ বেড়ে গেছে। বাকু ইউরোপের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ হতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।