ভারতকে ছাড়িয়ে দ্রুততম প্রবৃদ্ধির দেশ হতে চলেছে সৌদি আরব

ভারতকে ছাড়িয়ে চলতি বছর বিশ্বের দ্রুততম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হতে চলেছে সৌদি আরব। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুবাদে বাড়তি রাজস্ব আয়কে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি ভারতকে পেছনে ফেলবে। খবর আরব নিউজ।

চলতি অর্থবছরে মূলধনী ব্যয়ে অগ্রাধিকারের ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

ভারতের পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, চলতি বছর রাজস্ব আয় চাঙ্গা থাকায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে সৌদি আরব ভারতকে পেছনে ফেলতে চলেছে। অন্যদিকে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতে অভ্যন্তরীণ ভোগ চাহিদা সঙ্কোচনের কারণে প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে ৭ শতাংশে।

এক বিবৃতিতে ভারতের পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয় বলেছে, মার্চে শেষ হতে চলা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ভারতের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের নতুন বাজেট উপস্থাপন হবে। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি সরকারের এটাই হতে চলেছে কোনো পূর্ণাঙ্গ অর্থবছরের শেষ বাজেট। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের ব্যয় বরাদ্দের খাত চিহ্নিতে বিস্তারিত উপাত্ত প্রকাশ করেছে দেশটির পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়।

মোটামুটি চাঙ্গা অবস্থায় ভারতের চলতি অর্থবছর শুরু হলেও একপর্যায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু পদক্ষেপের কারণে প্রবৃদ্ধির গতি স্তিমিত হয়ে আসে। চলতি বছর এ পর্যন্ত বেঞ্চমার্ক সুদ হার ২২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। ফেব্রুয়ারির প্রথম অনুষ্ঠেয় পরবর্তী পলিসি রিভিউ সভায় আরেক দফা সুদ হার বৃদ্ধির ঘোষণা আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সৌদি আরব বিদায়ী বছরের শেষপ্রান্তে গত ডিসেম্বর মাসে ১০ হাজার ২০০ কোটি রিয়াল (২ হাজার ৭১৩ কোটি ডলার) বাজেট উদ্বৃত্ত ঘোষণা করে, যা পূর্ববর্তী প্রাক্কলনের চেয়ে এক হাজার ২০০ কোটি রিয়াল বেশি।

২০২৩ সালের বাজেট পাসের পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, সরকারি খাতের পরিচালন মডেলে সংস্কার সফল হওয়ায় এ বাজেট উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের রিজার্ভ চাঙ্গা করতে ও জাতীয় তহবিলগুলোকে সমর্থন দিতে এ উদ্বৃত্ত ব্যবহার করা হবে।

তিনি বলেন, সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-তে বর্ণিত লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার ২০২৩ সালে অঞ্চলভিত্তিক ও খাতওয়ারি কৌশলের ভিত্তিতে মূলধনী ব্যয়কে অগ্রাধিকার দেবে।

গত সেপ্টেম্বরে আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্টে সৌদি আরবে ২০২২ সালে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ ও ২০২৩ সালে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

আইএমএফের তুলনায় কিছুটা বেশি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। সংস্থাটি ২০২২ সালে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে সৌদি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি কমে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ২ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসবে।

নভেম্বরে এক প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, জি-২০ ফোরামে দ্রুততম প্রবৃদ্ধির দেশ সৌদি আরব। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৩ শতাংশ, যা জি-২০ ফোরামভুক্তদের মধ্যে সবচেয়ে কম।