ইমরান খানের মাস্টারস্ট্রোক, বিলুপ্তির পথে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদ

আগাম নির্বাচন আয়োজনে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীনদের বাধ্য করতে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সবচেয়ে বড় প্রদেশ পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া ঠেকাতে পিএমএল-এন, পিপিপি, জেইউআই জোটের প্রচেষ্টা ভেস্তে দিয়েছেন তিনি। খবর ডন, ট্রিবিউন।

ইমরান খানের কৌশলের কাছে হেরে গেছে ক্ষমতাসীনদের কূটকচাল

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহী প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দিতে গভর্নর বালিগ-উর-রহমানকে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠির একটি ছবি নিজের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে গভর্নর লিখেছেন, পাঞ্জাব পরিষদ ভেঙে দিতে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়েছি। মন খারাপ করেই আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

পাঞ্জাবের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি, মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে চৌধুরী মুনীস এলাহী একই চিঠির ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, প্রতিশ্রুতি রেখেছি। এখন সাধারণ নির্বাচন চাই।

মুনীস এলাহী যে প্রতিশ্রুতি রাখার কথা বলেছেন তা হলো পারভেজ এলাহীর রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদের (পিএমএল-কিউ) সঙ্গে পিটিআইর সমঝোতার প্রতি বিশ্বস্ত ও অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা। পাঞ্জাব পরিষদে পিএমএলি-কিউর এমএলএ ১১ জন। পিটিআইর ১৭৭ জন এমএলএর সমর্থন নিয়েই সরকার গঠন করেছিলেন সংখ্যালঘু দলের নেতা পারভেজ এলাহী।

আগাম নির্বাচনের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে ইমরান খানের দল পিটিআই পাঞ্জাব বিধানসভা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নিতে পিএমএল-কিউকে অনুরোধ করে। এ অবস্থায় যেনতেনভাবে পাঞ্জাব বিধানসভা টিকিয়ে রাখতে ইসলামাবাদে ক্ষমতাসীনরা বলেছিল, পিটিআই সমর্থন প্রত্যাহার করলেও তারা পিএমএল-কিউকে সমর্থন দেবে। পারভেজ এলাহী সে প্রলোভন উপেক্ষা করে নীতিতে অটল থেকেছেন।

পিটিআই ও পিএমএল-কিউর জোট ভাঙতে ক্ষমতাসীনরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। একদিকে পারভেজ এলাহীকে সমর্থনের প্রস্তাব এবং একই সময়ে তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে তারা। উদ্দেশ্য ছিল, মানসিক চাপে ফেলে পারভেজ এলাহীকে বাধ্য করা যাতে ইমরান খানের তরফ থেকে অনিশ্চিত সমর্থনের কথা ভুলে ক্ষমতাসীনদের প্রতিশ্রুত সমর্থন পেতে তাদের সঙ্গে হাত মেলান।

ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম কুশীলব ও পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি পাঞ্জাবে জোট ভাঙা-গড়ার খেলা চালাতে একদিন আগেই সেখানে যান। পারভেজ এলাহীর সঙ্গে গোপন দেনদরবারের পাশাপাশি চলতে থাকে প্রলোভনের খেলা। পিটিআই থেকে এমএলএ ভাগিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি গোপন বৈঠক হয়।

জারদারির সর্বাত্মক চেষ্টার পরও গতকাল বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটে টিকে গেছে পাঞ্জাবে পারভেজ এলাহী সরকার। এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দিতে গভর্নরকে চিঠি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী এলাহী।

আস্থা ভোটে পরাজয় স্বীকার করে পিপিপি বলেছে, পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া ঠেকাতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে। তবে পিটিআই নেতা ইমরান খান ভালো খেলেছেন, যে কারণে পিপিপি ও দলের নেতা আসিফ আলী জারদারির পক্ষে করার মতো তেমন কিছু ছিল না। অতীতে বিভিন্ন সময় পরিস্থিতি ‘ম্যানেজ’ করলেও জারদারি এবার কিছু করতে পারেননি।