ডালের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা পাকিস্তানিরা

বছরের শুরু থেকে পাকিস্তানের বাজারে ডালের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। চড়া মূল্যস্ফীতির মধ্যে ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি পাকিস্তানের মানুষকে নতুন দুর্ভোগে ফেলেছে। খবর ডন।

বন্দরে আটকা পড়ে আছে আমদানিকৃত ডালের বেশকিছু চালান                                       প্রতীকী ছবি

ব্যাংক থেকে যথাসময়ে নথিপত্রের অনুমোদন না পাওয়ায় বন্দরে আটকা পড়েছে আমদানিকৃত ডালের বেশকিছু চালান। বন্দর থেকে খালাস করতে না পারায় বাজারে আসছে না নতুন সরবরাহ। এ অবস্থায় নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে খোলাবাজারে বিরামহীনভাবে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের ডালের দাম।

করাচি হোল সেলার্স গ্রোসার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রউফ ইব্রাহীম জানান, ডলার সংকট ও আমদানি নথি অনুমোদনে ব্যাংকের অনাগ্রহের কারণে করাচি বন্দরে আসা মশুর ডালবোঝাই ৬ হাজার কন্টেইনার দুই মাস ধরে ছাড় করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা গতকাল বৃহস্পতিবার স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেছে।

কমোডিটি ব্যবসায়ী ফয়সাল আনিস মজিদ জানান, গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিনে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ১৭০ রুপি। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দাম হয় প্রতি কেজি ১৮০ রুপি। চলতি মাসের শুরু থেকে প্রতি কেজি ছোলা পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০৫ রুপি দরে।

তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে মশুর ডাল ডিসেম্বরে ছিল প্রতি কেজি ২০০ রুপি। বছরের প্রথম দিন বিক্রি হয়েছে কেজি ২০৫ রুপিতে। এখন চলছে প্রতি কেজি ২২৫ রুপি। একইভাবে মাষকলাইয়ের দাম পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ডিসেম্বরের শুরুতে ছিল ২৮৮ রুপি। জানুয়ারির প্রথম দিন ছিল প্রতি কেজি ৩১৫ রুপি, যা এখন বেড়ে ৩৩৫ রুপিতে উঠেছে। মুগ ডালের দাম ১ ডিসেম্বর ছিল প্রতি কেজি ২০০ রুপি। ১ জানুয়ারি মুগ ডাল বিক্রি হয়েছে কেজি ২২৫ রুপি দরে। এখন হয়েছে কেজি ২৬০ রুপি।

খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে প্রতি কেজি মশুর ২৭০-২৮০ রুপি, মুগ ডাল ২৫০-৩০০ রুপি, কলাই ৩৮০-৪০০ রুপি ও ছোলা ২৩০-২৬০ রুপিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত বছর জানুয়ারিতে এসব পণ্যের দাম ছিল প্রতি কেজি যথাক্রমে ২১০-২৪০ রুপি, ১৮০-২২০ রুপি, ২৬০-৩০০ রুপি ও ১৬০-২০০ রুপি দরে। বন্দর থেকে ছাড়করণে দেরি হলে বাজারে ডালের দাম আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ী মজিদ জানান, বছরের প্রথম দিন থেকে ব্যাংকগুলো আমদানি নথি গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে। একইভাবে, বন্দরে পৌঁছা পণ্যের মূল্য পরিশোধ বন্ধ রেখেছে ব্যাংক। এলসির কাগজপত্রও তারা আর নিচ্ছে না।

তিনি বলেন, বন্দরে আটকে পড়া কন্টেইনার ও জাহাজের ডেমুরেজ মাশুল প্রতি দিন বাড়ছে। আখেরে এই বাড়তি খরচের দায় ভোক্তাদের ঘাড়েই চাপবে। বন্দরে থাকা চালান খালাস ও নতুন চালান আমদানি করতে না পারলে আসন্ন রমজান মাসে বিশেষত মটর ও ছোলার বাজারে বিরাট সংকট দেখা দেবে। অর্ডারের পর একেকটি চালান পৌঁছাতে ৪৫-৬০ দিন সময় লাগে। এরইমধ্যে সরবরাহকারকরা আস্থা হারাতে বসেছে। অনেকেই পাকিস্তানিদের সঙ্গে নতুন শিপমেন্ট বাতিল করছে।