হিরো আলম: স্যার ডাকার ভয়ে তারা আমাকে হারিয়ে দিয়েছে

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মাত্র ৮৩৪ ভোটে পরাজিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, স্যার ডাকার ভয়ে কিছু শিক্ষিত মানুষ আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহরতলির এরুলিয়ায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম

হিরো আলম বলেন, কিছু শিক্ষিত মানুষ আমাকে আগে থেকেই মানতে পারছিল না, কারণ এমপি হলে আমাকে তাদের স্যার বলতে হবে। আমাকে স্যার বলতে কষ্ট হবে এমন লোকেরাই ফল পাল্টে দিয়ে কারসাজি করে আমাকে পরাজিত করেছেন।

এ আসনের ফলে দেখা যায়, মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন হিরো আলম। একতারা প্রতীকে হিরো আলমের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫৭১। নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ২৩ দশমিক ৯২।

ভোট দেন হিরো আলম

হিরো আলম বলেন, ১০টি কেন্দ্রের ফল ছিনতাই করা হয়েছে, আমার বিজয় ছিনতাই হয়েছে। তাই আমি এই ফল প্রত্যাখ্যান করছি। এই ফল আমি মানি না। ফল বাতিল চেয়ে আমি উচ্চ আদালতে রিট করব।

এদিকে নির্বাচনে হেরে গেলেও অন্যান্য বিষয় নিয়ে খুশি ছিলেন হিরো আলম। তিনি বলেন, বুধবার সারা বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল, নির্বাচনে হিরো আলমের আজ কী হবে? এই নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের মানুষের আগ্রহ দেখে মনে হয়েছে, আমি এমপি নয়, প্রধানমন্ত্রীর ভোট করলাম। এগুলো দেখে গর্বে আমার বুকটা ভরে গেছে। অনেকেই মনে করেছিল আমার বিজয় হবে। কিন্তু আমার সেই বিজয় ছিনতাই হয়েছে। আমি এ বিষয়ে আদালতে যাব।

হিরো আলম অভিযোগ করেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রশাসনে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ফল ঘোষণা করা হচ্ছিল। ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯টি কেন্দ্রের ফল কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণা করা হয়। এক পর্যায়ে ফল ঘোষণায় বিরতি দেওয়া হয়। পরে বাকি ১০ কেন্দ্রের কেন্দ্রভিত্তিক ফল ঘোষণা না করেই জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, ভোটের অনিয়ম বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল। কোনো লাভ হয়নি। এখন ফল বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে যাব।

হিরো আলম গণমাধ্যমকর্মীদের আরও বলেন, সারাদিন মাঠে ভোটারের তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো উপস্থিতি তেমন ছিল না। এরই মধ্যে হঠাৎ করে এত ভোট কোথা থেকে এলো বুঝতে পারছি না। যে মশাল মার্কার অস্তিত্বই ছিল না, তারা কীভাবে আমার চেয়ে বেশি ভোট পেল বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

বগুড়া সদর আসনের নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই আসনের অনেক কেন্দ্রে তার এজেন্টকে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। অনেককে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাই সকালেই ওই আসনের ভরসা ছেড়ে দিই।

পরে ভক্তদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি। ভোটে হারলেও আমি সারাজীবন মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।