আপনি পড়ছেন

ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) পশ্চিমা বিশ্ব। এরই ধারাবাহিকতায় ইইউ গতকাল নতুন করে আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মস্কোর ওপর। এর ফলে নতুন করে ইউরোপের ২৭ দেশে আর কোনো ধরনের জ্বালানি বিশেষ করে ডিজেল ও পরিশোধিত বা অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করতে পারবে না রাশিয়া। গতকাল থেকেই এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী হয়েছে। খবর আলজাজিরা।

eu bans russian oilরাশিয়ার তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ

এর আগে, গত শুক্রবার রাশিয়ার ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ মার্কিন ডলার বেঁধে দেয় ইইউ। বিষয়টি নিয়ে ইইউর সমালোচনা করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে, তাতে রাশিয়া নয়, বরং ইইউসহ পশ্চিমারাই ভয়াবহ জ্বালানি সংকটে পড়বে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রাশিয়া কখনোই পশ্চিমাদের ওপর ভরসা করে না বরং পশ্চিমারাই রাশিয়ার তেল গ্যাস আর কয়লা ছাড়া অচল ও দুর্বল। রাশিয়া প্রয়োজনে ব্যারেল মাত্র ৬০ ডলারে মিত্রদেশ চীন, তুরস্ক ও ভারতের কাছে বিক্রি করবে। ফলে তেল বিক্রি নিয়ে রাশিয়ার কোনো সমস্যা নেই, বরং তেলের অভাবে বিপদে পড়বে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলোই।

eu ruassiaরাশিয়া ও ইইউ

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপের দেশগুলোতে তেল সরবরাহ বন্ধ করা হলেও ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোতে রপ্তানি অব্যাহত রাখার সংকেত দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন রাশিয়া ইউরোপের বাজারের বড় একটি অংশ হারাবে, তেমনি চীন ও ভারতের কাছে স্বল্পমূল্যে তেল রপ্তানিতে বাধ্য হবে। তবে এর ফলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে।

জ্বালানি বিষয়ক গবেষক নিল অ্যাটকিনসন বলেন, সর্বশেষ ইইউ নিষেধাজ্ঞা অন্তত প্রাথমিকভাবে দামের উপর বড় প্রভাব ফেলবে না। এর কারণ হল বিশ্বব্যাপী কোম্পানিগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আগেই রাশিয়ান তেলের স্টক তৈরি করছে। ফলে বাজার আপাতত স্বাভাবিক থাকবে। তবে যদি হঠাৎ করে তেলের খুব বেশি চাহিদা তৈরি হয়, তাহলে হয়তো সামান্য কিছু ঘাটতি ও মূল্যবৃদ্ধির দেখা মিলতে পারে।

এদিকে কোনো কোনো বাজার বিশ্লেষক বলছেন, ইইউর নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রই আরও চাপে পড়বে। কারণ সেক্ষেত্রে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখাটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। অর্থনীতিবিদ থমাস বলেন, গত এক বছরে রাশিয়ার ওপর প্রচুর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তারপরও রাশিয়া প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করে নিজেদের অর্থনীতিকে ঠিকই মজবুত করে চলেছে। বরং এতে রাশিয়া ইউক্রেনে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে।

অর্থনীতিবিদ ডনেল বলেন, নিষেধাজ্ঞার এই ডামাডোলে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়বে বাইডেন প্রশাসন। কারণ বিশ্ববাজারে তেলের সংকট তৈরি হলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। এতে রাশিয়া নয় বরং পুরো বিশ্বই সংকটে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ধস নামতে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতেও।

জানা গেছে, শুধু ডিসেম্বরেই ইউরোপে ডিজেল বিক্রি থেকে রাশিয়া ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছে। আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়ায় আমদানিকারকরা অতিরিক্ত কেনাকাটা করে মজুত করেছেন বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে ইউরোপ ইতোমধ্যেই রাশিয়ান কয়লা এবং বেশিরভাগ অপরিশোধিত তেল নিষিদ্ধ করেছে। অন্যদিকে মস্কো নিজেই প্রাকৃতিক গ্যাসের বেশিরভাগ চালান বন্ধ করে দিয়েছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.