লিফট কিনতে ইউরোপ যাচ্ছেন ৯ কর্মকর্তা, থাকবেন ৭ দিন

ঢাকার আশকোনায় র‌্যাব হেড কোয়ার্টারের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। বাকি আছে শুধু লিফট বসানোর কাজ। সেই লিফট কিনতে ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ডে যাবেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ৯ কর্মকর্তা।

লিফট কিনতে ইউরোপ যাবেন ৯ কর্মকর্তা, থাকবেন ৭ দিন

জানা গেছে, ফিনল্যান্ডের লিফট নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘কোনি এলিভেটরস লিমিটেড’ থেকে লিফট কিনবে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাই প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনে ফিনল্যান্ডে যাবেন ওই ৯ কর্মকর্তা। তবে লিফট কিনতে যারা ফিনল্যান্ডে যাচ্ছেন, তারা কেউই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নন। চলতি মাসের মধ্যে তাদের যাওয়ার কথা রয়েছে। যাতায়াতের সময় বাদে দলটি এক সপ্তাহ ফিনল্যান্ডে অবস্থান করবে।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা গেছে, আশকোনায় র‌্যাব হেড কোয়ার্টার প্রকল্পে আছে ১০ তলা ব্যারাক ভবন, ১২ তলা ব্যাচেলর কোয়ার্টার ভবন, ৮ তলা এমটি শেড, ১০ তলার এক হাজার স্কয়ার ফিটের কোয়ার্টার, ১০ তলার আটশ স্কয়ার ফিটের কোয়ার্টার, ১০ তলার ছয়শ স্কয়ার ফিট কোয়ার্টার। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে। বাকি আছে শুধু লিফট বসানোর কাজ।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী নন্দিতা রাণী সাহা স্বাক্ষরিত এক নথিতে বলা হয়, বাংলাদেশি এজেন্ট মজিদ সন্স কর্তৃক র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর নির্মাণ প্রকল্পের মালপত্র কেনার বিষয়ে ফিনল্যান্ডে প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছে। এতে গণপূর্তের পাঁচজন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ও র‌্যাব সদর দপ্তরের তিনজন কর্মকর্তা অংশ নেবেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রস্তাবকৃত প্রকৌশলীরা হলেন- গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (রিজার্ভ) আবু জাফর মুহাম্মদ শফিউল হান্নান, গণপূর্ত প্রকল্প বিভাগ-৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লতিফুল ইসলাম, মহাখালী গণপূর্ত বিভাগের (চলতি দায়িত্ব) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমান উল্লাহ সরকার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী মাশফিক আহমেদ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি।

এদিকে প্রস্তাবিত নামের তালিকার পরিপ্রেক্ষিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের চিঠি দিয়েছে প্রকল্প পরিচালক। এতে বলা আছে, প্রকল্পে লিফট স্থাপনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে, এমন কাউকে নির্বাচন করতে হবে।

দেশের একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাদের মধ্যে আবু জাফর মুহাম্মদ শফিউল হান্নান ছাড়া কেউই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নন। যদিও লিফট স্থাপনের কাজ করবে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল বিভাগ, কিন্তু শফিউল হান্নান হলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের। সেই হিসেবে লিফট স্থাপনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এমন একজন প্রকৌশলীও এই প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনের জন্য নির্বাচন করা হয়নি।

এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার বলেন,  এখানে যারা যাবেন তাদেরকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখতে হয়। এক. যে জিনিসগুলো আসবে, তা ঠিক আছে কিনা। দুই. জিনিসগুলো ঠিকমত বুঝে নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে গেলে কর্মকর্তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ে। কেউ যখন একটি  বড় কোম্পানির উৎপাদন, কোয়ালিটি এবং স্পেসিফিকেশনগুলো সরাসরি দেখতে পায়, তখন তিনি অনেক কিছু জানতে পারেন, বুঝতে পারেন।

প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার বলেন, এসব ভ্রমণের ক্ষেত্রে আমরা পুরো ডিপার্টমেন্ট নিয়েই চিন্তা করি। একটি প্রজেক্টের সঙ্গে অনেক বিভাগ থাকে। এরপরও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নামই প্রস্তাব করার চেষ্টা থাকে। এরপরও অন্য  কাউকে পাঠানো হয়ে থাকলেও সমস্যা নেই, তাদেরও জ্ঞানার্জনের দরকার আছে।