জেলেনস্কি: বিমান পাঠাতে প্রস্তুত কিছু ইউরোপীয় মিত্র

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বেশ কিছু ইউরোপীয় মিত্র কিয়েভকে বিমান পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে। আকস্মিক এক সফরে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে জেলেনস্কি

ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেন, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ইউরোপ আমাদের সাথে থাকবে। বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা আমাকে বিমানসহ প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। আমাদের আরও অনেক মিত্র রয়েছে, যাদের কাছে আমরা যুদ্ধবিমান ও অন্য বিমানের বিষয়টি উত্থাপন করতে যাচ্ছি। রাশিয়ার অব্যাহত হামলার প্রেক্ষিতে আরও অস্ত্রের সন্ধানে ইউরোপে বিরল এক সফরের পর তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে জেলেনস্কি এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো কিছু জানাননি। তার এ বক্তব্যের সমর্থনে ইউরোপীয় দেশগুলোর পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি। যুদ্ধবিমান দেওয়ার বিষয়টি সত্য হলে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার মোকাবেলায় এটি ইউক্রেনের জন্য বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হবে।

রাজা তৃতীয় চালর্সের সাথে জেলেনস্কি

জেলেনস্কি এর আগে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি বলেন, রাশিয়ার সাথে তার দেশের লড়াই সমগ্র ইউরোপের স্বাধীনতার জন্যই। কারণ রাশিয়া ইউরোপের সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিতে চায়। তবে আমরা সেটা করতে দেব না। পরে তার দেশকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ করার জন্য অত্যন্ত আবেগপূর্ণ আবেদন করেন জেলেনস্কি।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা তার ভাষণে জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যতদিন প্রয়োজন আমরা আপনার পেছনে আছি। আপনার জাতির ভবিষ্যত ইউরোপীয় ইউনিয়নে। আমরা আমাদের নিয়মনীতি, আমাদের জীবনযাপনের পদ্ধতি ধ্বংস হতে দেব না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য দেওয়ার আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা ও ইউরোপীয় মিত্ররা যেভাবে শুরু থেকে আমাদের সহায়তা করে আসছে তাতে পুরো ইউক্রেন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে সময়ের সাথে সাথে যুদ্ধের চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যুদ্ধবিমান। অত্যাধুনিক ফাইটার জেট পেলেই পাল্টে যাবে পুরো যুদ্ধচিত্র। অন্যদিকে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে জেলেনস্কি বলেন, অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানই হতে পারে ইউক্রেনীয়দের মুক্তির মূল চাবিকাঠি।

প্রায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেন বিভিন্ন দেশের কাছে অস্ত্র সহায়তা চেয়ে আসছে। তবে সম্ভাব্য যুদ্ধ বাড়ানোর বা সংঘাতে আরও জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা কিয়েভে যুদ্ধবিমান পাঠাতে অস্বীকার জানিয়ে আসছে। কারণ মস্কো বারবার সতর্ক করেছে, যে তারা এ ধরনের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাজ্য বা অন্য পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করলে ইউক্রেনীয়দের ক্ষতি হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ ইউক্রেনের পরিণতিকে আরও বেদনাদায়ক করে তুলবে।