'শেষ নাগরিককে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে'

তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৬ ফেব্রুয়ারি যে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, তাতে ওই অঞ্চলের প্রতিটি শহর ধংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে অক্ষত কোনো ভবনের দেখা পাওয়া মুশকিল। ভূমিকম্পের পর ১০ দিন ধরে চলছে উদ্ধার কার্যক্রম। বিদেশি স্বেচ্ছাসেবকরাও দিন রাত কাজ করছেন ক্ষতিগ্রস্ত এসব অঞ্চলে। এখন তারা ফিরে যাচ্ছেন। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমাদের শেষ নাগরিকটিকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিযান চালিয়ে যাব। খবর রয়টার্স।

এরদোয়ান

খবরে বলা হয়, প্রলয়ংকারী ওই ভূমিকম্পের পর মানবিক সহায়তার পাশাপাশি উদ্ধারকাজে লোক পাঠিয়েছে অনেক দেশ। দশদিন ধরে তারা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বের করেছেন জীবিত মানুষ আর হতভাগ্যদের মরদেহ। তবে ১০ দিন পর অনেকস্থানেই কাজ শেষ হয়ে এসেছে। তাই উদ্ধারকর্মীরাও নিজ দেশে ফিরে গেছেন। বাকিরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, ধসে যাওয়া ভবনের নিচে পড়ে থাকা শেষ নাগরিকটিকেও উদ্ধার করব আমরা। সে পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিযান চালিয়ে যাব।

তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভূমিকম্পের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত মানুষ উদ্ধারের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এরপর সময় বাড়ার সাথে সাথে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে আসে। ফলে এই মুহূর্তে জীবিত মানুষ উদ্ধারের সম্ভাবনা একেবারেই কম।

এদিকে তুরস্কে ক্ষতিগ্রস্ত দশটি প্রদেশের শহরগুলো পুনর্নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এমনিতেই ভূমিকম্পে অনেক ভবন একেবারে মাটির সাথে মিশে গেছে। আর বাকি যেগুলো আছে, সেগুলোর অধিকাংশই ব্যবহার উপযোগী নেই। ফলে সেগুলোও ভেঙে একেবারে নতুন করে নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তুরস্কের পরিবেশ ও গৃহায়ণবিষয়ক মন্ত্রী মুরাত কুরুম এক টুইট বার্তায় লেখেন, যেসব ভবন নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলো দ্রুত গুঁড়িয়ে দেব আমরা। তারপর এসব স্থানে আমরা নিরাপদ বাড়ি নির্মাণ করব। বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) সদর দপ্তরে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন এরদোয়ান। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যালোচনা শেষ করা হবে। কয়েক মাসের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, যেসব বাড়ি, অফিস ধসে গেছে, সব আমরা পুনর্নির্মাণ করব। এরপর আমরা সেগুলো ভবনের মালিকের কাছে হস্তান্তর করবো। তুরস্কের ব্যবসায়ীদের সংগঠন এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড বিজনেস কনফেডারেশন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণে সাত হাজার কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে।