যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ১০০ মিলিয়ন ডলার, তুরস্কের দাবি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্ককে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একতরফাভাবে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়েছে আঙ্কারা। খবর মিডলইস্টমনিটর।

হেলিকপ্টারে পরিদর্শন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার তুরস্ক সফরে করেন। তিনি ইনসিরলিক বিমানঘাঁটিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসুগলোর সঙ্গে দেখা করেন এবং ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্বের শহরগুলোর ক্ষয়ক্ষতির বিষয় পর্যালোচনা করেন। তারা হেলিকপ্টারে করে ক্ষতিগ্রস্ত হাতায় প্রদেশ পরিদর্শন করেন এবং পরে রাজধানী আঙ্কারায় ফিরে তারা একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তুরস্কের সহায়তা এগিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী ও উদ্ধারকর্মী পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন ও কাভুসোগলু

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার অনুদান রয়েছে। আমি যখন ওয়াশিংটনে তুর্কি দূতাবাস পরিদর্শনে যাই, তখন সেখানে প্রবেশ করা আমার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ পুরো রাস্তাজুড়ে ত্রাণসামগ্রী উঁচু করে রাখা ছিল।

প্রায় দুই সপ্তাহ উদ্ধার অভিযানের পর এ সপ্তাহের শুরুতে তা পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। তুরস্কের প্রশাসন এখন পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ তাঁবুতে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তাদের জন্য এরদোয়ান সরকার আগামী মাস থেকেই ৩০ হাজারের বেশি বাড়ি বানানোর ঘোষণা দিয়েছে।

ব্লিঙ্কেন এ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন. তুরস্ক এখন পুনর্নির্মাণের জন্য একটি ব্যাপক প্রচেষ্টা নিতে যাচ্ছে। আমরা সেই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে এখন পর্যন্ত মোট ১৮৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন এই সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এ সময় তিনি ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যকার ইতিবাচক এজেন্ডা এবং অর্থনীতি ও বাণিজ্যের পাশাপাশি সামরিক সম্পর্ক ও সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার বিষয়ে অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে কাভুসোগলু বলেন, তুরস্কের প্রত্যাশা ছিল যুক্তরাষ্ট্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আঙ্কারার ওপর থেকে একতরফা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। একইসঙ্গে তুরস্কের কাছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়টিও সামনে এগিয়ে নেবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার এস-৪০০ ক্রয়সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের কারণে বিগত বছরগুলোতে আঙ্কারার ওপর এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।