আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে ‘বিরল সম্প্রচার’

বিশ্বজুড়ে গতকাল পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিভিন্ন দেশ দিবসটি নানা কর্মসূচিতে পালন করেন। আফগানিস্তানেও দিবসটি বিশেষ কর্মসূচিতে পালন করেছে সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ। তারা কেবল নারীদের দিয়েই তাদের প্রোগ্রাম সাজিয়েছে। খবর রয়টার্স।

তোলো নিউজের অনুষ্ঠান

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর নারীদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা নিষেধ আরোপ করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওইসব বাধা নিষেধের জেরে গত দেড় বছরে ৭৫ শতাংশের বেশি নারী সাংবাদিক তাদের চাকরি হারিয়েছেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তবে তালেবান কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা ইসলামী আইন এবং আফগান সংস্কৃতির ব্যাখ্যা অনুযায়ী নারীদের অধিকারকে সম্মান করে। বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করছেন।

এ অবস্থায় গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ শুধু নারীদের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রোগ্রাম সম্প্রচার করেছে। তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি একটি বিরল সম্প্রচার।

আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে

বুধবার সন্ধ্যায় তিনজন নারী আলোচক এবং একজন নারী সঞ্চালকের প্যানেল ইসলামে নারীদের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা হিজাবের পাশাপাশি সার্জিক্যাল মাস্ক দ্বারা তাদের মুখ আবৃত রেখেছিলেন।

আলোচনায় অংশ নেওয়া সাংবাদিক আসমা খোগয়ানি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে নারীদের শিক্ষিত হওয়ার অধিকার, কাজ করার অধিকার প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আরেক অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জাকিরা নাবিল বলেন, নারীদের শেখার ও কাজ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। সমাজে কোনোভাবেই নারীর অস্তিত্ব মুছে ফেলা যাবে না। যদি স্কুলে শিক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে সে বাড়িতেই জ্ঞান অর্জন করবে।

তালেবান প্রশাসন গত বছর নানা কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ সীমিত করে দেয়। এছাড়া চাকরির ক্ষেত্রেও নারীদের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান বিধিনিষেধের পাশাপাশি দেশের গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার হিসেব অনুযায়ী নারী কর্মসংস্থান ২৫ শতাংশ কমে গেছে। এর ফলে নারীরা বাড়িতে টেইলারিংয়ের মতো স্ব-কর্মসংস্থানমূলক কাজের দিকে ঝুঁকছেন।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মিশন (ইউএনএএমএ) বুধবার নারী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে তালেবানকে নারীদের অধিকারের ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তালেবান প্রশাসন বলেছে, তারা ইসলামী আইন এবং আফগান সংস্কৃতির ব্যাখ্যা অনুসারে নারীদের অধিকারকে সম্মান করে। তারা মেয়েদের জন্য স্কুল এবং নারীদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।