ভিন্ন দেশ থেকে দ্রুত মার্কিন ভিসা পাচ্ছেন ভারতীয়রা

ভারত থেকে মার্কিন ভিসা পেতে কারও কারও এক বছর বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। এ কারণে তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে মার্কিন ভিসার আবেদন করছেন বহু ভারতীয়। তুলনামূলক কম সময়ে তারা ভিসা পেয়েও যাচ্ছেন। চলতি বছর এরইমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিক তৃতীয় দেশ থেকে মার্কিন ভিসার আবেদন করেছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

তৃতীয় দেশ থেকে মার্কিন ভিসার আবেদন করে দ্রুত ফলাফল পাচ্ছেন ভারতীয়রা

নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের মিনিস্টার-কাউন্সেলর ডোনাল্ড এল হেফলিন বলেছেন, ফাস্ট ট্র্যাকে ভিসা পেতে তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে আবেদনের ধারণাটি ভারতীয়দের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। ২০২৩ সালের প্রথম কয়েক মাসেই ৫০ হাজারের বেশি ভারতীয় এ অপশনটির সুবিধা নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভিসা ইন্টারভিউর আবেদন করতে ভারতীয়রা তৃতীয় কোনো দেশে গেলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে সেটা এমন দেশ হতে হবে যেখানে আপনি ভিসা ছাড়া যেতে পারেন অথবা যে দেশে আপনি ভিসা পেতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বি-১ (অস্থায়ী ভিজিট ভিসা), এইচ-১বি (নন-ইমিগ্র্যান্ট নিয়োগ) ও এল-১ (আন্তঃকোম্পানি ট্রান্সফার) ভিসা আবেদনকারীদের মধ্যে তৃতীয় দেশে গিয়ে ভিসা আবেদনের ধারণাটি বেশি জনপ্রিয় বলে তিনি জানান।

গত বছর ভারতে ১ লাখ ২৫ হাজার স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বছরও সমান সংখ্যক ভিসা দিতে চাই। তবে বিষয়টা নির্ভর করছে মার্কিন কলেজ ও ইউনিভার্সিটিগুলো কত দ্রুত ভর্তি ফরম ছাড়ছে এবং ভারতীয় শিক্ষার্থীরা কত ভালোভাবে নিজেদের কেসটি আমাদের কাছে উপস্থাপন করছেন, তার ওপর।

ডোনাল্ড হেফলন বলেন, স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হলে পরবর্তীতে সে ক্যাটাগরিতে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমতে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথম সাক্ষাৎকারটিই ভিসা পাওয়ার সেরা সুযোগ, দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারটি দ্বিতীয় সেরা সুযোগ এবং তৃতীয় সাক্ষাৎকার তৃতীয় সেরা সুযোগ।

তিনি বলেন, প্রথমবার স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করে প্রত্যাখ্যাতরা দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের ডাক পাবেন সংশ্লিষ্ট মৌসুমে অন্যান্য ফার্স্টটাইম আবেদনকারী বা ফ্রেশারের সাক্ষাৎকার শেষ হবার পর। আপনি যে দফায় প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন, সে দফায় অন্য সবার সাক্ষাৎকার শেষের পর আপনি পরবর্তী সাক্ষাৎকারের স্লট পাবেন। তবে এটা বলে রাখা ভালো যে আগে হলেই ভালো। তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চমবারের মতো স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করে তেমন ভালো ফল আসে না।

স্টুডেন্ট ভিসার জন্য অত্যন্ত ভিড় থাকলেও তাতে অন্যান্য ক্যাটাগরি যেমন বি-১, বি-২ টুরিস্ট ও বিজনেস ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে তিনি জানান।

মার্কিন দূতাবাসের এ কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মার্কিন ভূখণ্ড থেকে কয়েকটি নির্দিষ্ট শ্রেণির ভিসা ইস্যুর একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি নিয়েছে। চলতি বছরের গ্রীষ্মে এ কর্মসূচি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। এ কর্মসূচিটি পুরোদমে চালু হলে ভারতে ভিসার হাজার স্লট খালি হবে এবং আবেদনের পর ভিসা পেতে অপেক্ষার সময় অনেক কমে আসবে।

তিনি বলেন, কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসা যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই নবায়নের সুযোগ চালু হবার পর অনেক ভারতীয় স্রেফ পাসপোর্টে নতুন করে সিল মারার জন্য দেশে ফেরার ঝক্কি থেকে বেঁচে গেছেন। এখন আরও কয়েকটি ক্যাটাগরির ওয়ার্ক ভিসার জন্য এ সুযোগ চালু হচ্ছে। এইচ ও এল ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদনের পর অপেক্ষার সময় অনেক কমেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।