'আরও দুই বছর যুদ্ধ চালানোর অস্ত্র আছে রাশিয়ার'

অন্য কোনো দেশের সাহায্য ছাড়াই ইউক্রেনে আরও দুই বছর যুদ্ধ চালিয়ে যাবার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র রাশিয়ার হাতে আছে। দেশটির মজুত অস্ত্র ইউক্রেনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা রাখে। রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এ কথা জানিয়েছে। খবর এএফপি।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা সে দেশের সমরাস্ত্র কারখানাগুলোকে উৎপাদন বৃদ্ধির তাগিদ দিচ্ছেন

লিথুয়ানিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে ভিলনিয়াসে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির বেসামরিক ও সামরিক গোয়েন্দা শাখার দুই প্রধান। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাশিয়ার যুদ্ধের সামর্থ্য নিয়ে কথা বলেন মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স চিফ ইলেজিউস পলাভিসিয়াস।

পলাভিসিয়াস বলেন, এখন ইউক্রেনে যেভাবে যুদ্ধ চলছে ঠিক একই তালে রাশিয়া একাই আরও দুই বছর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রস্তুত ও মজুত করছে রাশিয়া। অন্য কোনো দেশ থেকে রাশিয়া সাহায্য পাবে না, এমনটা ধরে নিয়েই দুই বছরের কথা বলছি।

গত মাসে জার্মান ম্যগাজিন ডের স্পিগেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের কাছ থেকে জেডটি-১৮০ ড্রোন কিনতে আলোচনা চালাচ্ছে রাশিয়া। সবকিছু ঠিক থাকলে এপ্রিলে চীনা ড্রোন রাশিয়ায় পৌঁছাবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করে এসেছেন, ইরান রাশিয়াকে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন সরবরাহ করছে। স্থানীয়ভাবে ওই ড্রোন প্রস্তুতের জন্য কারখানা করতে ইরানি বিশেষজ্ঞরা রাশিয়াকে কারিগরি সহযোগিতা করছে বলেও পশ্চিমা প্রচারমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

এদিকে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। পূর্ব এশিয়ার দেশটি থেকে রেলপথে রাশিয়ায় অস্ত্রের চালান পৌঁছেছে বলেও মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে লিথুয়ানিয়ার সামরিক গোয়েন্দা প্রধান বলেন, রাশিয়ার একার সামর্থ্য নিয়ে আমরা কথা বলেছি। চীন, ইরান থেকে রাশিয়া অস্ত্র পাচ্ছে বলে বিভিন্ন সময়ে খবর বেরিয়েছে। সেটা সত্যি হলে দুই বছর নয়, আরও বেশি সময় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে তারা।

লিথুয়ানিয়ার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সরকারের নীতির বিষয়ে নাগরিকদের অসন্তোষ এখন প্যাসিভ রূপ নিয়েছে। সেনাবাহিনীতে যোগদান এড়ানো, রসদ-সামগ্রী নিয়ে অভিযোগের মাধ্যমে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করছে।

এতে বলা হয়, রাশিয়া যদি যুদ্ধক্ষেত্রে হোঁচট খায়, নতুন করে রিজার্ভ সৈন্য তলবের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আকষ্মিক কোনো অবনতি ঘটে, তাহলে সেখানকার সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকিতে পড়তে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ন্যাটোর সদস্য লিথুয়ানিয়া রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের পক্ষে সরব ও সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে।