মরক্কোর বাদশাহকে ব্ল্যাকমেইল: দুই ফরাসি সাংবাদিকের কারাদণ্ড

মরক্কোর বাদশাহ ষষ্ঠ মোহাম্মদকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য দুই ফরাসি সাংবাদিককে এক বছরের স্থগিত কারাদণ্ড দিয়েছে প্যারিসের একটি আদালত। ১৪ মার্চ, মঙ্গলবার এই রায় দেওয়া হয়। খবর এএফপি।

ক্যাথেরিন গ্রেসিয়েট ও এরিক লরেন্ট

প্যারিসের ফৌজদারি আদালত ক্যাথেরিন গ্রেসিয়েট (৪৮), এরিক লরেন্ট (৭৫) নামের দুই ফরাসি সাংবাদিককে এক বছরের স্থগিত কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার ইউরো (১০ হাজার ৫৭৭ ডলার) জরিমানা করেছে।

স্থগিত কারাদণ্ড একটি আইনি ব্যবস্থা যেখানে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে কারাগারে যেতে হয় না। তবে ভবিষ্যতে সেই অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া হতে পারে, যদি সে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অন্য অপরাধ করে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। লরেন্টের আইনজীবী দাবি করেছেন, দুই সাংবাদিক মরক্কোর গোয়েন্দাদের দ্বারা পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।

এরিক লরেন্ট এবং ক্যাথেরিন গ্রেসিয়েটকে ২০১৫ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার করে ফরাসি পুলিশ। এর আগে তারা মরক্কোর রাজতন্ত্র সম্পর্কে 'কলঙ্কজনক বই’ প্রকাশ না করার শর্তে ২০ মিলিয়ন ইউরোর একটি চুক্তি করেছিলেন মরক্কোর প্রতিনিধি হিশাম নাসিরির সঙ্গে।

এরপর দুই সাংবাদিককে দুটি খাম দেওয়া হয়, যার প্রত্যেকটিতে ৪০ হাজার ইউরোর নোট ছিল। খাম নিয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ২০ আগস্ট মরক্কো প্যারিসের আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করে। এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য আবেদন জানানো হয়।

মরক্কোর বাদশাহর প্রতিনিধি আইনজীবী হিশাম নাসিরি সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রতিটি সাক্ষাতকার রেকর্ড করেছিলেন। তিনি তদন্তকারীদের কাছে এগুলো হস্তান্তর করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই রেডিও ফ্রান্সের সাবেক রিপোর্টার এরিক লরেন্ট মরক্কোর বাদশাহর সচিবালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ১১ আগস্ট রাজতন্ত্রের প্রতিনিধি হিশাম নাসিরির সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ক্যাথেরিন গ্রেসিয়েটও উপস্থিত ছিলেন।

এই সাক্ষাতের সময় লরেন্ট রাজতন্ত্রের কলঙ্ক নিয়ে দ্বিতীয় বই লেখার হুমকি দেন। এর আগে ২০১২ সালে তিনি ‘দ্য প্রিডেটর কিং’ নামে মরক্কোর বাদশাহকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সাংবাদিকদের দাবি, মরক্কোর বাদশাহর দূতই তাদেরকে বইটি প্রকাশ না করার জন্য একটি আর্থিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

অপরদিকে মরক্কোর অভিযোগ, সাংবাদিকরাই বইটি না লেখার বিনিময়ে ৩০ লাখ ইউরো চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০ লাখ ইউরোর বিনিময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়।