সিরিয়ান সরকারবিরোধী বিদ্রোহের ১২তম বার্ষিকী উদযাপন

যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অ্যাক্টিভিস্টসহ হাজার হাজার সিরিয়ান সরকারবিরোধী বিদ্রোহের ১২তম বার্ষিকী উদযাপন করেছেন। ১৫ মার্চ, বুধবার সিরিয়ান বিপ্লবের ১২তম বার্ষিকী পালন করা হয়।

হাজার হাজার সিরিয়ান সরকারবিরোধী বিদ্রোহের ১২তম বার্ষিকী উদযাপন করেছেন

এদিন অনেকেই বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে এই উপলক্ষে জড়ো হয়েছিলেন। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে নিহত, গ্রেপ্তার এবং গুমের শিকার মানুষদের প্রতি অনলাইনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

হোয়াইট হেলমেট বা সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স নামে পরিচিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সিরিয়ানরা যে দিনগুলো কেটে গেছে তার চেয়ে ভিন্ন দিন চেয়েছিল, তারা নীরবতার দেয়াল ভেঙেছে এবং স্বাধীনতা ও পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে। তারা এমন অবস্থার মধ্যে দিন কাটিয়েছে যা মানুষ বুঝতে পারবে না।'  

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা যে জীবন হারিয়েছি এবং আসাদ সরকারের অন্ধকূপে যারা গ্রেপ্তার ও নিখোঁজ হয়েছেন, আমরা তা ভুলব না। যত বিলম্ব হোক না কেন বিচার ও পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।' 

সিরিয়ার সাংবাদিক রাজান ইব্রাহিম লিখেছেন, ‘আজ আমরা সিরিয়ায় চলমান মানবিক ট্র্যাজেডির ১২ বছর উদযাপন করছি। ১২ বছর ধরে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যু, গ্রেপ্তার, আটক, গুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এছাড়া সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। অথচ পুরো বিশ্ব কিছুই করছে না। সিরিয়া এবং সিরিয়ানদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়।' 

২০১১ সালের জানুয়ারিতে আরব বসন্তের প্রভাবে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের বাথবাদী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছোটখাটো বিক্ষোভ শুরু হয়। গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি জানিয়ে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মার্চ মাসে এসে তীব্র আকার ধারণ করে। জবাবে সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর নৃশংসভাবে দমন-পীড়ন করে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ মারা যান এবং কয়েক হাজার আহত হন। এরপরই শুরু হয়ে যায় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ।

উল্লেখ্য, ১২ বছর ধরে চলা সিরিয়ার এই গৃহযুদ্ধে ৫ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। কেবলমাত্র তুরস্কেই প্রায় ৩৫ লাখের মত সিরিয়ার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।    

সূত্র: দ্য নিউ আরব