ইতালি-ইংল্যান্ড: কী হয়েছিল ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে?

২০২০ সালের উয়েফা ইউরোর ফাইনালে উঠে ইতালি-ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ সালের পর বড় কোনো টুর্নামেন্টের (বিশ্বকাপ, ইউরোকাপ) ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। হ্যারি কেনরা স্বপ্ন দেখেছিল ইতিহাস লেখার। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সেই ফাইনালের আগে ইংল্যান্ড সমর্থকেরা আগে থেকেই উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।

ম্যারাডোনা স্টেডিয়াম

সেদিন ইংল্যান্ড সমর্থকদের কাঁদিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোর শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করে ইতালি। ম্যাচের পর স্টেডিয়ামের সামনে ঝামেলা করে ইংলিশ সমর্থকেরা। ইতালি থেকে আসা কিছু সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতি পর্যন্ত হয় এবং স্টেডিয়ামের বাইরে ভাঙচুর করে ইংল্যান্ডের বেশ কিছু সমর্থক। পরাজয়টা সেদিন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি ইংল্যান্ড।

ইংল্যান্ডের সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ এসেছিল গত শুক্রবার। উয়েফা ইউরো কোয়ালিফায়ার্সে দুই দল আরেকবার মুখোমুখি হয়। স্তাদিও দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় ইংল্যান্ড। যেটা ইতালিতে ১৯৬১ সালের পর ইংল্যান্ডের প্রথম জয়। ওই ম্যাচে গোল করে ইংল্যান্ড অধিনায়ক দেশটির সর্বকালের সেরা গোল স্কোরার হয়েছিলেন।

ইংল্যান্ড সমর্থকদের এত কিছু পাওয়ার ম্যাচটা অতটা আনন্দদায়ক ছিল না মাঠের বাইরের কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে। চারজন সমর্থকের টিকিট চেক করা নিয়ে প্রথমে সমস্যা হয় নেপলস কর্তৃপক্ষের। এরপর আরও কিছু বাজে ঘটনা ঘটে ইংল্যান্ডের কিছু সমর্থকদের সঙ্গে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কয়েকজন ইংলিশ সমর্থক অভিযোগ করেছেন, মাঠে ঢোকার আগে পুলিশ তাদেরকে লাঠিপেটা করে। এমনকি ম্যাচের পূর্ণ সময় পরও তাদের বের হতে দেওয়া হয়নি। আরও এক ঘণ্টা স্টেডিয়ামে আটকে রাখে পুলিশ।

ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা পরিচালিত ‘ইংল্যান্ড সাপোর্টার্স ট্রাভেল ক্লাব (ইএসটিসি)’ এ নিয়ে বলেছে, ‘ইতালির বিপক্ষে খেলার আগে এবং পরে ইংল্যান্ড সমর্থকদের সঙ্গে যা হয়েছে তাতে আমরা কেউ-ই সন্তুষ্ট না। আমরা অনেকের থেকে অভিযোগের ই-মেইল পাচ্ছি, যেখানে তারা উদ্বেগ এবং হতাশার কথা উল্লেখ করেছেন। সোমবার আমরা তাদের মতামত সরাসরি শুনেছি এবং ভ্রমণরত ইংল্যান্ড পুলিশের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তার থেকে আমরা জানতে পারি তারাও নাকি সেখানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, যেমনটা কিছু সমর্থকের সঙ্গে হয়েছে।’

এ বিষয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আলাদা বিবৃতিতে বলেছে, ‘সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে যা ঘটেছে তা পর্যালোচনা করতে উয়েফাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

এদিকে, ২০২০ ইউরোর ফাইনালের পর ইংল্যান্ড সমর্থকদের সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিয়েছে ইতালি, ঘরের মাঠে পেয়ে ইংল্যান্ড সমর্থকদের শিক্ষা দিতেই এমনটা করতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।